মোঃ ওয়ালিউর রহমান রাজু, লালমনিরহাট অফিস \ জেলার আদিতমারীর সাপ্টিবাড়ীতে ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড এ দুর্ধষ ডাকাতির ঘটনায় নাইট গার্ডসহ ২জন গ্রেফতার হয়েছে। মুল আসামী চেয়ারম্যান পুত্র জুয়েল সহ ৩জন পলাতক রয়েছে। গত ২০ জুলাই গভীর রাতে সাপ্টিবাড়ীস্থ সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের গোডাউন ঘরে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে চম্পট দেয়। এব্যাপারে ডিপো ইনচার্জ রুহুল আমিন বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ীস্থ সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য সোহরাব হোসেনের নিজস্ব বাসভবনের ভিতরে ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড এর অফিস এবং মালামালের স্টোর রুম রয়েছে। উক্ত ডিপোর নাইট গার্ড হিসেবে একই এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান জাদু (৪৫) কর্মরত ছিল। ডাকাত দল ওইদিন গভীর রাতে ডিাপোর ভিতরে প্রবেশ করে তার হাত, পা ও মুখ বেধে স্টোর রুম থেকে প্রায় ৪০লক্ষ টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। ওই দিন সকালে কোম্পানীর অন্যান্য কর্মকর্তা এসে নাইট গার্ডকে বাধা অবস্থায় দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উক্ত নাইট গার্ডকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানা পুলিশ তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে ডাকাতির প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটিত হয়। পরবর্তীতে পুলিশ গ্রেফতারকৃত নাইট গার্ডকে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ১৬৪ ধারায় জবান বন্দী রেকর্ড করেন। জবান বন্দীতে উক্ত নাইট গার্ড বলেন, আমি ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানী সাপ্টিবাড়ীস্থ ডিপোতে নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করি। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৯/৭/২০২০ ইং তারিখ রাতে ডিউটি করার সময় রাত অনুমানিক ২টা থেকে ২.৩০ ঘটিকার সময় সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য সোহরাব হোসেনের পুত্র শাহিনুর আলম জুয়েল, খাতাপাড়াস্থ ছয়ফালের পুত্র জামাল, জামুরটারীর আলমের পুত্র রোমান, টেপাটারী গ্রামের আমুর পুত্র রিপন গোডাউনে আসে এবং তার রুমে আটকে রেখে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার সিগারেটের কাটুন নিয়ে যায়। এদের সকলের বাড়ী আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের উল্লেখিত গ্রামে। নাইট গার্ড জাদু জানান, উল্লেখিত আসামীসহ আরো ৪/৫ জন উক্ত অফিসে এসে আমার ঘরের হেজবল লাগিয়ে দেয় এবং বাইরের বাতি নিভিয়ে দেয়। এসময় আমি ভিতর থেকে চিৎকার করলে কেউ সাড়া দেয়নি। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আমি অনেক চেষ্টা করে ভিতর থেকে বের হয়ে সোহরাব চেয়ারম্যনকে চুরির ঘটনাটি বলি এবং অফিস দেখায় বলে নাইট গার্ড ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দী দেন। সে আরো জানায়, আমি ভয় পেয়ে চেয়ারম্যানকে ঘটনাটি বললে তিনি গামছা দিয়ে চোখ মুখ বেধে সিড়ির সাথে আমাকে বেধে রাখে। পরে সকাল ৬.৪৫ ঘটিকার সময় অফিসের স্টোর কিপার বাবুল চন্দ্র ঘটনাস্থলে এলে আমাকে বাধা অবস্থায় দেখে আমার ছবি তুলে। পরবর্তীতে অফিসের হিসাব রক্ষক মোসাদ্দেক এসে মোবাইল ফোনে উপরের বসদের ঘটনাটি জানালে সকাল সাড়ে ৯টার সময় পুলিশ এসে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে থানায় নিয়ে যায়। এদিকে ডাকাতি ঘটনার মুল আসামী সাপ্টিবাড়ীস্থ সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পুত্র জুয়েলসহ অন্যান্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ নিরপরাধ নাইট গার্ড জাদু ঘটনার সাথে জড়িত না থাকলেও তাকে হাজত বাস করতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানান। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ ওয়ালিউর রহমান জানান, এই মামলায় ২আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে মামলাটি সুষ্ঠভাবে তদন্ত পুর্বক প্রকৃত আসামীদের চিহ্নিত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হবে। যাতে কোন ব্যক্তি অহেতুক হয়রানির শিকার না হন এ জন্য পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। এব্যাপারে মামলার বাদী উক্ত কোম্পানীর ডিপো ইনচার্জ রুহুল আমিন জানান, আমি যে অভিযোগ দায়ের করেছি তাতে কোন আসামীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। থানা পুলিশ নাইট গার্ড জাদুকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন