কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে অসহায় ও দুস্থ্যদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশেষ ওএমএস এর উপকারভোগির তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই নেতা তার ১৩জন আতী্বয়সহ বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম তালিকাভূক্ত করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে। ঘটনাটি ঘটেছে, উলিপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড নিজাই খামার এলাকায়।
জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া দেশের জেলা সদর পৌরসভা ও জেলা সদর বর্হিভূত পৌরসভার মানুষজনকে বিশেষ ওএমএস (১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয়ের লক্ষে) এর আওতায় আনার জন্য তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেন সরকার। এই নির্দেশনার পাওয়ার পরপরই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সমন্বয় করে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেন প্রশাসন। এসময় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে ২শ ৭ জন হতদরিদ্রের তালিকা
তৈরিতে সহায়তা করেন ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম। এ সুযোগে ওয়ার্ড সভাপতি শফিকুল ইসলাম তালিকায় তার স্বজনদের নাম অন্তর্ভূক্ত করেন। তার তৈরিকৃত তালিকায় ১নং ক্রমিকে রয়েছেন, বেয়াই আমিন মন্ডল, ৮৭ নং এ ভাই সিরাজুল ইসলাম, ৮নং এ ভাবি নাজমা বেগম, ৯০ নং এ ভাতিজা নাজমুল হুদা,৭ নং এ চাচা আবু তালেব, ৯২ নং এ চাচী শেফালি বেগম, ৬নং এ চাচাত ভাই আঃ হাই, ৯ নং এ চাচা আবু তাহের, ১০ নং এ চাচাত ভাই হযরত আলী, ১১ নং এ চাচাত ভাই সাহেব আলী, ১৭ নং এ চাচাত ভাই মহসিন, ২১ নং এ আবু তাহের, ৯৭ নং এ ভাতিজা রানু মিয়ার নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেন।
এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীসহ সরকারের অন্যান্য সুবিধাভোগীরা এই তালিকায় অন্র্Íভূক্ত হওয়ার নিয়ম না থাকলেও ওই ওয়ার্ড সভাপতি তার দেয়া তালিকায় ২নং ক্রমিকে থাকা ফজলুল হক, ৪নং এ মালেকা বেগম ও ৫নং এ সাহেব আলীর পরিবারের সদস্যদের নামে বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড থাকার পরেও তাদের নাম অন্র্Íভূক্ত করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে উলিপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা প্রকৃত অস্বচ্ছল তালিকায় তাদের নাম দেয়া হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, আতী্বয়-স্বজনের মধ্যে ধনী মানুষের নাম দেয়া হয়নি। গরীব মানুষের নাম দেয়া হয়েছে। সরকারের দেয়া অন্যান্য সুবিধাভোগীদের নামের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ১নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার আঃ রব বলেন, ওই ওয়ার্ডে কে কার আতী্বয় তা আমি জানি না। তবে তালিকা তৈরির সময় উনারা আমার সঙ্গে ছিলেন। যেহেতু আমি এ এলাকার লোক নই, তাই সবাইকে চিনি না।
বিশেষ ওএমএস এর বরাদ্দ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের তালিকায় অনিয়মের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *