তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম ঃ

উলিপুরে জবাই করে রফিকুল হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালেই হত্যাকাণ্ডের শিকার রফিকুলের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী আলিফ উদ্দিনের পুত্র রফিকুলকে সন্দেহজনকভাবে পুলিশ আটক করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কিলিং মেশিনে জড়িত আরো একজনকে শুক্রবার রাতেই পুলিশ আটক করেছে। তার নাম ফেরদৌস আলী সে ঐ তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু, একটি মোবাইল ও ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় তদন্তকারী কর্মকর্তা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফেরদৌস স্বীকার করেছে অর্থের লোভেই কিলিং মিশনে জড়িত কয়েকজন মিলে রফিকুলকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। কুড়িগ্রাম চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফেরদৌস স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নিশ্চিত করেছেন।
হত্যাকান্ডের শিকার রফিকুলের স্ত্রী লাইজু বেগম শুক্রবার রাতেই উলিপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিলিং মিশনে জড়িত অন্যদের দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেলার উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের আবুল হোসেন (ফাগু)এর পুত্র অটোচালক রফিকুলকে কতিপয় দুর্বৃত্ত্ব জবাই করে হত্যার পর মুন্সিবাড়ির অদূরে তেলিপাড়া গ্রামে লাশ রাস্তার পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ে রেখে যায় ।
শুক্রবার ভোরে তেলিপাড়া গ্রামের কয়েকজন মুসুল্লি নামাজ পড়তে এসে লাশটি দেখতে পায় এবং পুলিশে খবর দেয়। উলিপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কুড়িগ্রাম থেকে সিআইডির একটি চৌকস দল সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেন। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম ঐদিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনা দ্রুত উদঘাটনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহ আলম ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান। রফিকুলের স্ত্রী লাইজু বেগম জানান, তার স্বামী রফিকুল (৩৫) প্রথম বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাত এতে দিনকাল ভালো না যাওয়ায় চায়ের দোকানে মেসিয়ারির কাজ করেন বেশ কিছুদিন। পরবর্তীতে বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে লোন নিয়ে কিছুদিন আগে একটি অটো রিক্সা ক্রয় করেন। সেটি সম্প্রতি বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সেই অটো বিক্রির ৮০ হাজার টাকা সহ ঘটনার আগের দিন আশা এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা তোলা হয়। এই টাকাটা সম্পূর্ণ তার স্বামীর কাছে ছিল বলে তিনি দাবি করেন এবং এই টাকার জন্যই তার স্বামীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্বামী খুন হওয়ার পর লাইজুর জীবনে এখন চরম অনিশ্চয়তা। অবুঝ দুই সন্তানকে নিয়ে কিভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে সে চিন্তায় লাইজু এখন দিশেহারা।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামানের কথা হলে তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে, ইতিমধ্যে দুজন আটক রয়েছে, খুব দ্রুতই হত্যাকারীদের আটক করে আইনের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *