কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পথ ভুলে উলিপুরে আসা শিশুটি থানায় থেকে যেতে চান। স্নেহ যত্ম ও আন্তরিকতায় যেন শিশুটি নিরাপদ স্থান খুঁজে পেয়েছে উলিপুর থানা পুলিশের মাঝে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় পথচারীরা সুমাইয়া ওরফে রুমি (৭) নামের শিশুটিকে উলিপুর কৃষি ব্যাংক লিঃ এর বারান্দা থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে দেয়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা সদরে কৃষি ব্যাংকের বারান্দায় কান্নারত অবস্থায় একটি শিশুটি দেখতে পান পথচারীরা। এ সময় শিশুটি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পথভুলে এখানে এসেছে বলে জানায়। তাদেরকে শিশুটি বলে, পাত্রখাতা গ্রামে তার বাড়ি। এরপর পথচারীরা শিশুটিকে থানা হেফাজতে দেন।

শুক্রবার (২ জুলাই) বিকালে থানায় শিশুটির খোঁজ নিতে গেলে জানা যায়, চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামে শিশুটির বাড়ি। তারা দুই ভাই বোন। ছোট ভাই কামরুল (৫)। তার পিতার নাম এরশাদুল হক ও মাতা কাজলী বেগম। শিশুটির মা-বাবা আলাদা হয়ে গেছেন প্রায় ৯ মাস পূর্বে। এরপর পিতা সুমাইয়াকে ও মাতা কামরুলকে নিজেদের কাছে রেখে দেন। মা কাজলী বেগম ছোট সন্তান কামরুলকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সেখানে তিনি পোশাক শ্রমিকের কাজ করেন।

বাবা এরশাদুল হক মেয়ে সুমাইয়াকে ছোট ভাই দিনমজুর মমিনুলের কাছে রেখে জীবিকা নির্বাহের জন্য চট্রগ্রামে চলে যান, সেখানে তিনি রিকশা চালান।সুমাইয়া ওরফে রুমি সাথে কথা হলে সে বলে, বাড়ি থেকে বেড়িয়ে হাটতে হাটতে এখানে চলে আসে। সে থানা পুলিশের স্নেহ যত্ম ও আন্তরিকতায় খুব খুশি। বাড়ির থেকে এখানে খুব আনন্দে আছে বলে জানায় সে । এখানেই থেকে যেতে চায়।
পুলিশ জানায়, শিশুটি পথ ভুলে পায়ে হেঁটে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে উলিপুরে চলে আসে। এরপর শিশুটির কথা অনুযায়ী তার পিতা-মাতার সন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে তার পিতা-মাতা কেউ বাড়িতে নেই। তার চাচা ও মামাদের খবর দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির জানান, থানায় নারী ও শিশু ডেক্সের তত্বাবধানে থাকা শিশুটি থানায় থেকে যেতে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা কিছুটা বিপাকে পড়েছি। সে তার বাড়িতে ফিরে যেতে চায় না। পুলিশ এখন প্রকৃত পক্ষে জনগনের বন্ধু, আতংক নয়। এ কারনে শিশুটিও বুঝতে পেরেছে স্নেহ ও যত্ম ও নির্ভরতার স্থান এখন পুলিশ। এ কারনে শিশুটি তার নিজের স্বজনের চেয়েও পুলিশের উপর আস্থা রাখছেন।
তিনি আরও বলেন, শিশুটির অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। যেহেতু বাবা-মা সেপারেট তাই চাচা ও মামাদের সাথে কথা বলে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অভিভাবকদের কাছে শিশুটিকে তুলে দেয়া হবে। তা সম্ভব না হলে সমাজসেবা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে সেফ হোমে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন