ফারহানা আক্তার,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ ৫/নভেম্বর
ঋণের টাকায় কেনা রিকশা চুরি হওয়ায় বিষণ্ণ মনে দাঁড়িয়ে আছেন ফরিদ হোসেন৷
কয়েক দিন আগেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৩৮ হাজার টাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছিলেন ফরিদ হোসেন (৫৫)। আশা ছিল, রিকশা চালিয়ে ঋণের কিস্তি দেবেন। কিন্তু সেই আশা ভঙ্গ হয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটের সামনে সড়ক থেকে রিকশাটি চুরি হয়ে গেছে।
রিকশা হারিয়ে ফরিদ হোসেনের বিষণ্ণ মনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে একজন যাত্রী নষ্ট টিভি মেরামত করতে শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটে আসার জন্য তাঁর রিকশায় ওঠেন। তিনি কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটের (জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের) সামনে এসে সড়কে রিকশাটি দাঁড় করিয়ে রেখে নষ্ট টিভিটি পৌঁছে দিতে যাত্রীর সঙ্গে টিভির মেকারের দোকানে যান। তিনি সেখান থেকে ফিরে এসে দেখেন, রিকশাটি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির তিনি রিকশাটি আর পাননি।
রিকশা চালিয়ে সংসার ও ঋণের কিস্তি দিচ্ছিলাম। রিকশাটি চুরি হওয়ায় আমার ক্ষতি হয়ে গেল।
ফরিদ হোসেন, রিকশাচালক, জয়পুরহাট
রিকশাটি হারিয়ে শহরের নতুন হাট এলাকায় বিষণ্ন মনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফরিদ। লালন হোসেন নামের স্থানীয় এক তরুণ এ সময় দাঁড়িয়ে থাকা ফরিদের ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। সঙ্গে রিকশা চুরির ঘটনার কথাও লেখেন।
ফরিদ হোসেনের বাড়ি শহরের নতুনহাট এলাকায়। তিনি বলেন, ‘কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার রিকশাটি চুরি হয়েছে। রিকশা চালিয়ে সংসার ও ঋণের কিস্তি দিচ্ছিলাম। রিকশাটি চুরি হওয়ায় আমার ক্ষতি হয়ে গেল।’
লালন হোসেন বলেন, ফরিদ চুরি যাওয়া রিকশাটি খুঁজতে শহরের নতুন হাটে এসেছিলেন। সেখানে তিনি বিষণ্ণ মনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন ছবিটি তুলেছেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রিকশাচালক ফরিদের এই ছবি দেখে ও ঘটনা শুনে স্থানীয় সাংসদ হুইপ Abu Sayeed Al Mahmood Sawpon Mp ভাই, তাঁকে কাল শুক্রবার জয়পুরহাটের বাসায় ডেকেছেন। আজ এ বিষয়ে ফরিদ উদ্দিনের পাশে দাঁড়ালেন জয়পুরহাট ২ আসনের সাংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি ভাই৷
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের মসজিদ মার্কেটের জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি পুরোনো রিকশা চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় চুরি যাওয়া রিকশার মালিক থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশ চুরি যাওয়া রিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মানবতার অগ্রদূত হিসেবে জয়পুরহাট বাসী আপনার এমন হাজারো কর্মকাণ্ডে আজীবন স্মরণ করবে। বেঁচে থাকবেন হাজারো ফরিদদের মুক্তোঝরানো হাসির মাঝে। আপনার এমন জনহিতকর মহৎ কাজ দেখে মানবসেবায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে নতুন প্রজন্মের মুজিব সেনারা! বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে আপনার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ, হাজারও স্যালুট আপনার প্রতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে, আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মিত হোক আরও সহজ ভাবে। জয় বাংলা।