নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের জাহানারা বেগম (৫০)। প্রায় ৫ বছর আগে স্ট্রোক করেছিলেন। অনেক চিকিৎসা করেও আরোগ্য লাভ করেন নাই। শেষে কোমড় থেকে নিচে অবশ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তিনি। এখনও প্রতি মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার ওষুধ খেতে হয়।
স্বামী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে জাহানারার অভাবের সংসার। জাহানারা অসুস্থ হওয়ার কিছুদিন পর মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। স্বামী রফিকুল ইসলাম বাড়ির সামনে একটি টঙ দোকানে চুল কাটার কাজ করেন। জাহানারা সুস্থ্য থাকাকালীন বিভিন্নজনের বাড়িতে কাজ করেও সংসারে সহযোগিতা করতেন। কিন্তু এখন স্বামী রফিকুল ছাড়া পরিবারে উপার্জনকারী কেউ নাই। রফিকুল সারাদিন চুল কাটার কাজ করে যে পরিমাণ আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। এই স্বল্প আয়ে সংসার পরিচালনা ও ওষুধপত্র কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে ৫ বছর ধরে হাঁটাচলা করতে পারেন না জাহানারা বেগম। দিনরাত ঘরে শুয়ে কাটান। সবসময় ঘরবন্দি থাকতে চান না জাহানারা। স্বামী ও সন্তানরা মিলে তাকে ধরে বাড়ির সামনে চেয়ারে বসিয়ে রাখেন মাঝেমধ্যে। বাইরের খোলা হাওয়া পেতে ও চলাফেরার জন্য তার একটি হুইলচেয়ারের প্রয়োজন। একটি হুইলচেয়ার পেলে জাহানারাকে আর কারো সহায়তা নিয়ে চলাফেরা করতে হবে না।
অসুস্থ জাহানারা বেগম বলেন, আমি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছি। এখনও প্রতিদিন ওষুধ সেবন করতে হয়। একদিন ওষুধ না খেলে অসুস্থতা আরো তীব্র রূপ নেয়। আমার স্বামী যে আয় করেন, তা দিয়ে কোনোরকমে দিন পার করি। ঠিকমতো ওষুধপত্র কিনতেও পারি না। ঘরের মধ্যে কতক্ষণ আর শুয়ে বসে কাটাই। মন চায় বাইরে একটু ঘোরাফেরা করি। হুইলচেয়ার কিনবো কি করে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, কেউ যদি একটি হুইলচেয়ার দিয়ে আমাকে সহায়তা করতো, আমার অনেক উপকার হতো। বাইরের মুক্ত বাতাস পেতে সরকারি, বেসরকারি সহ সমাজের দানশীল হৃদয়বান ব্যক্তিদের নিকট একটি হুইলচেয়ার পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।