রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ-সম্প্রতি ঠাকুরগায়ের রানীশংকেল উপজেলার দুই দুই বারের বিপুল ভোটের ব্যবধানের নির্বাচিত সাবেক মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান ও ঠাকুরগাও-পঞ্চগড় সংরক্ষিত ৩০১ আসনের এমপি সেলিনা জাহান লিটাকে নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে এমপি লিটার পা কেউ পানি দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছে এমন সচিত্র প্রতিবেদনে পীর হিসেবে ভন্ডামিতে নেমেছেন এমপি লিটা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এবং এ সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এধরনের সংবাদ দেখে তার জন্মভুমি রানীশংকৈল উপজেলার মানুষের মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এবং ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার গুঞ্জন চলে। এ সংবাটটির আসল রহস্য উদঘাটন করার লক্ষে গত ২৩ আগষ্ট আমাদের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাও ইউপি’র রাউতনগর চিলড্রেন বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অথ্যাৎ যেখানে এমপি লিটাকে পা ধুয়ে বরন করা হয়েছিলো সে স্থানে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন,স্থানীয়দের মধ্যে ঐ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সেলিনা টুডু বলেন,গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আমাদের ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে আমরা কিছু মেহমান আমন্ত্রন করি। আমন্ত্রিত মেহমানদের মধ্যে এমপি সেলিনা জাহান লিটাও ছিলেন এবং ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী তেল ও পানি মিশিয়ে পা ধুয়ে আমরা মেহমানদের বরন করে নিয়ে থাকি। আমরা এলাকার সমস্ত মহিলারা এমপি লিটাকে বহু অনুরোধ করে বলি আমাদের প্রথা অনুযায়ী আমরা আপনাকে বরন করবো এতে তিনি অস্বীকৃত জানালেও পাড়ার সব মহিলাদের অনুরোধে সে-সময় ছিলো শীতকালের ঠান্ডা এর মধ্যে তিনি আমাদের রিকোয়েস্ট রেখেছেন আমরা তার পা ধুয়ে বরন করে নেই। কিন্তু কিছুদিন ধরে শুনছি বরন করে নেওয়ার সময়কার ছবি দিয়ে এমপি লিটাকে নাকি আমরা পীর হিসেবে ভক্তি করছি এমন মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন হয়েছে। এই সংবাদটি আমাদের ধর্মীয় কালচারের উপর আঘাত এনেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এছাড়াও বড়দিন পালন অনুষ্ঠানের সভাপতি মি.সিংহ রায় সরেন মানিক বলেন,আমাদের ধর্মীয় প্রথা রক্ষা করার জন্যই সেদিন লিটা এমপি পাড়ার সব মহিলাদের অনুরোধে আমাদের মেয়েদের তার পা ধুয়ে প্রথা অনুযায়ী বরন করে নেওয়ার সম্মতি দিয়েছিলেন। আমরা তাকে পীর হিসেবে নই সেদিন মেহমান হিসেবে পা ধুয়ে প্রথা অনুযায়ী বরন করেছিলাম। আমাদের প্রথা রক্ষা করতে গিয়ে এমপি লিটাকে নিয়ে যে মিথ্যা সংবাদ করা হয়েছে,সংবাদটি আমাদের ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে। এ সংবাদের সাথে যারা জড়িত আমরা সবার শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
গরীব দুঃস্থদের সোলার যখন এমপির চাকুরজীবি বউমার নামে
রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ- যে সোলারটি হওয়ার কথা ছিলো একজন গরীব পরিবারের সদস্যদের নামে সে সোলারটি হয়েছে এমপির ভাতিজার সরকারী চাকুরীজীবি স্ত্রীর নামে। এছাড়াও ভাই, ভাতিজা, চাচা, একান্ত সহকারী,গাড়ীর ড্রাইভারসহ এমপির পরিবারের সদস্যর নামে ঠিক এমনি চিত্র দেখা গেছে ঠাকুরগাও-৩ আসনের এমপি অধ্যাপক ইয়াসিন আলীর বিনামূল্যে সোলার বিতরনের তালিকায়। এমপি ইয়াসিনের নির্বাচনী এবং নিজ উপজেলা ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈলে।
জানা যায়,দূর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে দুঃস্থ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে সোলার বিতরণের নিয়মনুযায়ী তিনি টিআর কাবিটাসহ মোট ১ কোটি ১১ লক্ষ ২৯ হাজার ১শত ২৪টাকা বরাদ্দ পান। এতে এমপি ইয়াসিন ২৫০১৬/১৭ অর্থ বছরের জাসস/ঠাকু-০৩/১২/১৭ নং ডিও তালিকায় তার পরিবারের সদস্যদের নামসহ ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের নামে সোলারের তালিকা প্রণয়ন করেছেন। যে তালিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃস্থ পরিবারের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার কর্মসুচির বাস্তবায়নের পরিকল্পনা বিরোধী বলে মনে করেন উপজেলার গরিব দুঃখী মানুষজন। আর এমপি ইয়াসিনের এমন কার্যক্রমে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের মহৎ পরিকল্পনাটি।
কয়েকদিনের অনুসন্ধানে জানা যায়,এমপি ইয়াসিনের বরাদ্দকৃত সোলারের তালিকায় এমপির ভাই সাবেক প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন চাচা আবু সুফিয়ান ভাতিজা নুর আলম ও মিল্টন সরকারী চাকুরীজীবি ভাতিজার স্ত্রী রুমানা আকতার এমপির একান্ত সহকারী রবিউল ইসলাম ,রফিকুল ইসলাম গাড়ী ড্রাইভার জসিমসহ অনেক বৃত্তবান ব্যক্তিবর্গের নাম। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে তার জনৈক ভাতিজা সোলার বিতরনের নামে সাধারন মানুষদের জিম্মি করে উৎকোচ আদায় করে থাকেন। এবং কি গম সংগ্রহ অভিযানে তার ভাতিজা পরিচয়ে তরিকুল ইসলাম নামক ব্যক্তি খাদ্য গুদামে কঠিন ক্ষমতার দাপট খাটান বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক ইয়াসিন আলী ওয়ার্কাস পার্টির দলীয় মনোনয়নে এমপি হওয়ার পর থেকেই তার ভাই ভাতিজারা তার নাম ব্যবহার করে অর্থনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। বিগত বছরে তার ভাতিজা মাহবুব আলম একাধিক সংগঠন মসজিদের নামে জালিয়াতি ভাবে টি আর তুলে অর্থ আর্ত্বসাৎ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এবং কি সে অভিযোগের উপজেলা প্রকল্প অফিসার বরাবরে অভিযোগও হয়েছিলো বলে একটি বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন,আমি গত বছরে এমপি সাহবেরে কাছে একটি ডিউ লেটার আনতে গিয়েছিলাম এমপির লোকজন ডিউ লেটারের বিনিময়ে আমার কাছে পাচশত টাকা নিয়ে কাগজ দিয়েছেন। এছাড়াও আরো একাধিক ব্যক্তি বলেন সোলার নিতে হলে তার লোকজনকে দুই হাজার টাকা করে উৎকোচ দিতে হয়। না হলে সোলার পাওয়া যায় না। এভাবে করেই এমপি ইয়াসিনসহ তার লোকজন জনসাধারনকে সরকারী সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত করছেন। মানুষের ভিতরে ক্ষোভ ও ভুল ধারনা সৃষ্টি করছেন সরকারের কার্যক্রমের উপর। এ নিয়ে রানীশংকৈলের জনসাধারনের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে সোলারেন ফাউন্ডেশনের রানীশংকৈল শাখা ম্যানেজার মিজু আহম্মেদ বলেন,তালিকায় যাদের নাম ছিলো আমরা তাদের নামই সোলার বরাদ্দ দিয়ে সংযোগ স্থাপন করেছি। গরীব দুঃখি বড়লোক নির্ণয় করার দায়িত্ব আমাদের নই।
ঠাকুরগাও-৩ আসনের এমপি ইয়াসিন আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,তার পরিবারের সদস্যদের নামে সোলার গুলো দুঃস্থ পরিবারদের দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *