ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রাস্তায় কথা-কাটাকাটির জের এ রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে ঘরের টিনের বেড়া, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও নারী কে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নজর মামুদ গ্রামের মৃত লুৎফর রহমান খন্দকার এর ছেলে সাইফুল খন্দকারের বাড়িতে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেলে সাইফুল খন্দকার বাড়ি থেকে বাজার যাওয়ার পথে একই গ্রামের ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক হযরত আলীর সাথে রাস্তায় সাইড দেওয়া-নেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় লোকজন জড়ো হয় দুজনকে থামিয়ে দিলে সাইফুর বাজারে চলে যান। এরই জের ধরে রাত ৮ টার দিকে ওই রিকশাচালক হযরত আলী(৫২), তার ছেলে নুর নবী (২৬), সুজন মিয়া (২৩), খবির আলীর ছেলে বজলুর রহমান (২৭), মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে আপেল মিয়া (২৫), নূর হোসেনের ছেলে নুরজামাল মিয়া (৩০) সহ বেশ কয়েকজন দলবদ্ধ হয়ে সাইফুল খন্দকারের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সাইফুলের ঘরের টিনের বেড়া ভাংচুরসহ একপর্যায়ে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে সাইফুরের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৩৫) কে টানা হেচরা ও মারধর করেন তারা। মাকে বাঁচাতে মেয়ে রুমি খাতুন (১৮) এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর ও টানা হেঁচরা করে শ্রীলতাহানি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গেলে আব্দুল বারী খন্দকার (৭১), ছাইদুল (৫৫), আঞ্জুমান আরা (৫৮) জানান, রাতে হঠাৎ চিৎকার শুনে আমরা বের হলে দেখি ২০/২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সাইফুলের বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। ৭/৮ জন মিলে তারা বাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। আমরা স্থানীয় লোকজন তাদের নিষেধ করলে উল্টো আমাদেকেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে জোরপূর্বক বাড়ির ভেতরে ঢুকেছিল।
এলাকাবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক খন্দকার বলেন, রাতে ঘটনাটি ঘটার পর পরই আমি এসেছিলাম। এসে দেখি ঘরের টিনের বেড়া ভাঙচুর করেছে। ঘরের ভেতরেরও তাণ্ডব চালিয়েছিল। রাতের আধারে কারো বাড়িতে ঢুকে এভাবে হামলা করা টা মোটেও ঠিক হয়নি। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
বাড়ির মালিক সাইফুল খন্দকার বলেন, রাস্তায় কথা কাটাকাটি হওয়ার পর আমি বাজারে গিয়েছিলাম। বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনা ঘটানোর সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার বাড়ীতে কোন পুরুষ মানুষ ছিল না। শুধুমাত্র আমার স্ত্রী ও আমার মেয়ে ছিল। পুরুষশূন্য একটি বাড়িতে ঢুকে তারা ও ঘরের টিনের বেড়া, আসবাবপত্র ভাঙচুর, আমার স্ত্রী ও মেয়েকে টানা হেচরা করে শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে। পরে আমি রাতেই থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হযরত আলীর ছেলে সুজন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে বাড়ির টিনের বেড়া ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুরের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি জানান, আমার বাবার সাথে রাস্তায় কথা কাটাকাটির খবর জানার পর আমরা সাইফুলকে খুঁজতে তার বাড়ীর সামনে গেছিলাম। সেখানে একটু উচ্চবাচ্য হয়েছিল। আমরা তার বাড়ির ভেতরেই ঢুকি নাই।