ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার ঃ কমলগঞ্জে এক মাহমুদের জবরদখল চেষ্টায় অতীষ্ট হয়ে উঠেছে একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান । অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে জারীকৃত জরুরী অবস্থা (১৪৪ ধারা), স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আপত্তি সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর চালাচ্ছেন ত্রাসের রাজত্ব। এমতাবস্থায়, যেকোন সময় ওই দুটি পরিবারের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ বিয়োগান্তক ঘটনা সংঘটিত হবার আশংকা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে- মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাীন ১নং রহিমপুর ইউনিয়নস্থিত রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত: আনফর উল্লাহর পুত্র মাহমুদ আলী দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকার নিরীহ কৃষকদের জমিজমা জবরদখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। প্রবাসে কর্মরত তার দুই পুত্রের পাঠানো টাকার গরমে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। ইতিপূর্বে তিনি জমিজমা জবরদখলের চেষ্টা চালিয়ে এলাকার গনি মিয়া, মরহুম মাও: মুজিবুর রহমান, শরিফুল ইসলামসহ কয়েকটি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন।
বিগত ভূমিজরিপ শুরু হবার পর থেকে মাহমুদ আলী তার প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আব্দুর রহিমের ৪৬ শতক ধানীজমির মালিকানা দাবী করে প্রথমে শুরু করেন আব্দুর রহিমকে হয়রানী। পরে শুরু করেন ওই ৪৬ শতক ধানীজমি জবরদখলের পায়তারা। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে, বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে রহিমপুর ইউপি অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে “আব্দুর রহিম ওই ৪৬ শতক ধানীজমির মালিক এবং মাহমুদ আলী যেন ওই ধানীজমি নিয়ে কোনপ্রকার ঝামেলা না করেন” সেইমর্মে লিখিত সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। মাহমুদ আলী তাৎক্ষণিকভাবে সেই লিখিত সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েও, পরবর্তীতে তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন- ইউপি অফিসের সিদ্ধান্ত আমি মানিনা। বিচারের মালিক চেয়ারম্যান নন। এরপর থেকে ওই ধানীজমি জবরদখলের চেষ্টা চালান একাধিকবার। আব্দুর রহিমের বাড়ীর মহিলা ও স্কুল পড়ুয়া মেয়েদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ওই জমির ফসল বিনষ্ট করেন। রাতের আধারে বাড়ির গাছ কেটে নেন।
নিরুপায় হয়ে আব্দুর রহিম মৌলভীবাজারের মাননীয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবর এ ব্যাপারে একটি পিটিশন মামলা (নং-১৩৭/১৭ইং (কমল) দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে মাননীয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কমলগঞ্জ থানাকে ওই জমিতে জরুরী অবস্থা (১৪৪ ধারা) জারী করার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ থানা ওই জমিতে জরুরী অবস্থা (১৪৪ ধারা) জারীর নোটিশ প্রদান করায়, ক্ষিপ্ত মাহমুদ আলী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। গত ২ জুলাই থেকে গত ৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন মাহমুদ আলী ও তার স্ত্রী একাধিকবার ধারালো দা নিয়ে আব্দুর রহিমকে ধাওয়া করেছেন। সর্বশেষ আজ ৬ জুলাই মাহমুদ আলী তার বাড়িতে বহিরাগত বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম ঘটিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন- আগামীকাল ৭ জুলাই তিনি ওই জমি দখল করবেন। আব্দুর রহিমের পক্ষ থেকে বিষয়টি কমলগঞ্জ থানাকে অবহিত করা হয়েছে। কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসান বিষয়টি দেখতেছেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *