ফারহানা আক্তার,,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের কালাইয়ে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে চেয়ারম্যান কৃর্তক একটি প্রত্যারণা মামলার আসামীকে মত্যুর সনদ দেয়ার অভিযাগ উঠেছে ।
উপজেলার ২নং আহম্মেদাবাদ ইউপির ১নং ওয়ার্ডর রাঘবপুর গ্রামের তালাশ মন্ডল নামে এক ব্যক্তি জীবিত থাকলেও তাকে কাগজে কলমে মৃত দেখিয়ে তার প্রতারনার মামলা থেকে অব্যহতি পাওয়ার আসায় মৃত সনদটি আদালতে দাখিল করা হয়েছে। ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে জয়পুরহাট বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রট আদালতে ৪২০/৪০৬ /১০৯ ধারায় একটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। তালাশ মন্ডল উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের রাঘবপুর গ্রামের মোবারক মন্ডলর ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় আত্মগাপনে আছেন বলে এলাকাবাসী জানান।
মামলার বাদি ইজার আলী জানান, ২০১৮ সালে আদমব্যসায়ী তালাশ মন্ডলের বিরুদ্ধে আদালতে প্রত্যারণার মামলা করি। চলতি বছরর ১১ জানুয়ারী ঐ মামলার ধার্য তারিখে আদালতে গিয়ে জানতে পারি আসামী তালাশ মন্ডল নাকি ৩৭ পূর্বে মৃত্যবরণ করেছেন। সেই মত্যুর সনদপত্রও নাকি দিয়েছেন আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলি আকবর। ২০১৯ সালে মামলাটি তদন্তের ভার কালাই থানা দিলে গত ৯/৯/২০১৯ সালে আসামী তালাশ মন্ডলকে মামলা থেকে অব্যহতী দেয় যার নামে মামলা নেই অথছ তার মৃত্যর সনদ আদালতে দাখিল করা হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, তালাশ মন্ডল আমার গ্রামের প্রতিবেশী। সে এখনো জীবিত আছে। আর এই জীবীত ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান মৃত্যর সনদ দিয়ে আমার মামলাকে মিথ্যা প্রমান করার চেষ্টা করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে রাঘবপুর গ্রামের নুর ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল খালকসহ একাধিক প্রতিবশী জানান, রাঘবপুর গ্রামর মোবারকের এক মেয়ে সুরমা ও তিন ছেলে তালাশ মন্ডল, খাইরুল এবং খাজা মিয়া। তারা কেউ মারা যায়নি। মোবারক মন্ডলের ছেলে মেয়ের সবাই জীবিত। প্রতারনার মামলা থেকে বাঁচাতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাকি মৃত্যর সনদ দিয়েছে।আমরা সেই কাগজ দেখলাম। এরা যে প্রতারক চেয়ারম্যানের দেওয়া মত্যু সনদই তার প্রমান। তালাশের ভাই খাজা মন্ডল বলেন, তালাশ আমার ভাই ছিলো। বাবার মুখে শুনেছি তালাশ ১৯৯৬ সালে মারা গেছে। মামলার বাদি ইজার আলী ও আমার অপর ভাই পলাশের সংঙ্গে সুদের টাকা পয়সার লেনদেন ছিলো। বনি বনা না হওয়াই ইজার আলী ভুল করে পলাশের যায়গায় তালাশের নামে মামলা করেন৷
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, মোবারকের তিন ছেলের মধ্যে তালাশ মারা গেছে। আপনারা ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখেন।
ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আঃ জলিল বলেন, তালাশ আমার আপন ভাতিজা। আমি ১৪ বছর ধরে জন প্রতিনিধি ছিলাম। তালাশ দুটি বিয়ে করেছে। গত ৬ মাস আগে এ মামলার বাদি ও বিবাদীদের নিয়ে আপোস মিমাংসার জন্য সালিশি বৈঠক করেছি। সেখানে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মামলা আপোষ করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে মামলাটিকে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য নতুন মেম্বারের যোগ সাজোসে তালাশকে মৃত্য সনদ দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, কয়েক দিন আগেই তালাশের সাথে আমার দেখা হয়েছে৷ তবে সে তালাশ নামেই এলাকাই পরিচিত৷
অনুসন্ধানে জানা যায়, তালাস ২০১৫ সালে বৈরাগী আলুষ্টোরে তালাশ নামে চাকরি করতেন। বৈরাগী বাজারে থেকে বিদেশ লোক পাঠানোর ব্যবসা করত। গত ২০১৮ সালে একটি প্রতারনার মামলা খেয়ে পালিয়ে ঢাকায় থাকেন৷ পরে নিজেকে পলাশ নামে ভোটার আইডি কাড সংশোধন করেছেন৷
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলি আকব্বর উমরাহ পালনে সৌদি আরবে থাকায় তার ছেলে রিপন জানান, তালাশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সনদটি দেওয়া হয়েছে। শুনেছি এটির প্রমান আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জান্নাত আরা তিথি জানান, মৃত্যুর সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সনদ নিতে হলে যাচাই-বাছাই করে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর দেওয়া উচিত ছিল। এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *