রফিকুল ইসলাম , কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ।

খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০২৫ সালের পহেলা জানুয়ারি গতকাল ছিল বুধবার । করোনাকাল ছাড়া ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে বই তুলে দেওয়ার বিষয়টি অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়। গত ১৫ বছরের মধ্য এবারই আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই অনানুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে । মুদ্রণ থেকে শুরু করে নানা জটিলতায় শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় বই ছাপা কম হওয়ায় স্বল্প পরিসরে কয়েকটি বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। নতুন এই শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফিরছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার পাঠ্যবইয়েও অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪৪১টি বই পরিমার্জন করা হয়েছে, যা অনলাইনে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে । নতুন বই সবার হাতে দিতে না পারায় পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশের ও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ বইয়ের। শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই প্রণয়ন এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে এনসিটিবি। কিন্তু ২০২৪ সালের প্রথম দিনে সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে নতুন বই বিতরণ শুরু হলেও প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থী সব বই হাতে পায়নি।
এবার নতুন বছরের জন্য সমস্যাটি তীব্র হয়েছে। এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাবর্ষে চার কোটির মতো শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। গতকাল বুধবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্যকুমারপুর এমএল উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্যকুমারপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা যায় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন শিক্ষাবর্ষের আংশিক বই হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর যেভাবে বই উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হয় এবার তা হয়নি। এ ব্যাপারে মধ্যকুমারপুর এমএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই জানান , সরকারিভাবে সব শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় বই এখনো আমাদের হাতে পৌঁছায়নি। যতটুকু পাওয়া গেছে তা দিয়েই আমরা নতুন শিক্ষাবর্ষের বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। ঘোগাদহ মালেকা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক মাস্টার জানান, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের পর শিক্ষার্থীরা নতুন বছরে নতুন শিক্ষাবর্ষের বই হাতে পাওয়ার আগ্রহে থাকেন। বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারলে আমরা অনেকটা খুশি হই। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে সব শিক্ষার্থীদের হাতে আমরা বই তুলে দিতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *