কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম এর বিরুদ্ধে একটি মহল পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজে সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম সাংবাদিকদের কাছে অপপ্রচারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, গত ১৯ জুন’ ২০২২ইং তারিখে সহকারী অধ্যাপক আব্দুস ছালাম বিধি মোতাবেক মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি দায়িত্বকাল ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলে মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে নানা সমস্যা তুলে ধরে হঠাৎ একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- সহকারী অধ্যাপক রাম গোপাল সরকার, সহকারী অধ্যাপক আনিছুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মহসীন আলী প্রমুখ। এসময় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা বলেন- মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে গভার্নিং বডিকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনায় মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিধি অনুযায়ী বেসরকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের এখতিয়ার কলেজের গভর্নিং বডির উপর ন্যস্ত রয়েছে। গর্ভনিং বডিকে ম্যানেজ করা এবং নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করার অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। যারা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন তারা সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ করেছেন। তাছাড়া তারা বর্তমানে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে দায়ীত্বে আছে তারাই বিধি মোতাবেক অবৈধ। কারন পর পর দুইবার বেশি শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়া যাবে না। অথচ তারা তৃতীয় মেয়াদে দায়ীত্ব পালন করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেটে উল্লেখ আছে প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষক, কর্মচারী ও অফিস স্টাফদের কোন ধরণের সভা-সমাবেশ বা সম্মেলন করার বৈধতা নাই। তথাপি আমি আমার ভাবমূর্তি ও কলেজের সম্মান রক্ষার স্বার্থে কোন প্রকার বাধা দেই নাই। কারণ সাংবাদিকরা হচ্ছে জাতির বিবেক। তাদের বাধা প্রদান করা কোন ক্রমেই যুক্তি সঙ্গত মনে করি না। তবে আমি কলেজের গভর্নিং বডিকে বিষয়টি জানিয়েছি। জাতীয় বিশ্বববিদ্যালয়ের বিধিতে উল্লেখ আছে কলেজের অধ্যক্ষ পদ শূন্য হলে অধ্যক্ষের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে উপাধ্যক্ষ অথবা জেষ্ঠ্যতম
০৫ (পাঁচ) জন শিক্ষকের মধ্যে যে কোন একজনকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। যা সম্পূর্ণরূপে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী গভর্নিং বডি রেজুলেশনের মাধ্যমে বোর্ড মিটিং করে নিয়োগ দিবেন। আমার প্রতিদ্বন্দি হিসেবে আমাকে নিয়ে যারা এ ধরণের মিথ্যা তথ্য সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছেন তারা বিষয়টি সঠিক করছেন না। জেষ্ঠ্যতার বলে আমি সব দিক থেকে নিয়মনীতির মধ্যেই আছি। আমি মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজে যোগদান করি ১৯৯৩ সালে এবং সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাই ২০০১ সালে। আর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেই ২০২২ইং সালের ১৯ই জুন। আমি দায়িত্ব নেবার পর কলেজের যে সমস্ত শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ ছিল তাদের বেতন চালু করেছি। এছাড়া ৬ (ছয়) মাসের বেতন সহ ২ (দুই) মাসের বেতন অগ্রীম দিয়েছি। ইতিপূর্বে উৎসব ভাতা বন্ধ থাকার পরেও আমি একটি উৎসব ভাতা দিয়েছি এবং নন এমপিও শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন বেতন বৈষম্য দূরীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বাড়ী ভাড়া সাড়ে ৭% থেকে বর্ধিত করে ১৫% করেছি।
ইনক্রিমেন্ট পূর্বেও ছিল না এখনও নেই। সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল হয়েছে মর্মে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বর্তমানে অনার্স ২য় বর্ষের পরীক্ষা চলমান। কলেজের প্রায় ১০০ জনের উপরে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। এরা সকলেই সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। আমি চেষ্টা করি কেউ যেন কোন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়। শুধুমাত্র পূর্ব হতে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী দূর্নীতি করে আসছিল। আমি দায়িত্ব নেবার পর হতে তাদের দূর্নীতি করা হচ্ছে না এবং তাদেরকে অর্থিক সুবিধা প্রদান না করায় তারা আমাকে নিয়ে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করছেন এবং স্বনামধন্য কলেজটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য চক্রান্ত করছেন। অপর এক প্রশ্নে মজিদা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম আরো জানায়, গভার্নিং বডির সভাপতি আমার নিয়োগের আগে পূর্ববর্তী অধ্যক্ষ খাজা শরীফ উদ্দীন আলী আহমেদ এবং সংবাদ সম্মেলনকারীরাই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম টুকু কে সত্যায়ন করে সভাপতি বানিয়ে এনেছেন। আমি অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *