শফিউল আলম শফি,কুড়িগ্রাম ঃ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার সীমান্তে আবারও একটি ‘বর্ডার ‘হাট’ হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই হাটটি হলে কুড়িগ্রামে দু‘টি বর্ডারহাট হবে। এর আগে ২০১০ সালের ২৩জুলাই রৌমারী উপজেলার বালিয়ামারী ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম গারোহিল জেলার কালাইয়েরচর সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে মহা ধুমধামে ‘ সীমান্ত হাট’ চালু করা হয়। ‘সীমান্ত হাট’ সৃষ্টির উদ্দেশ্য সর্ম্পকে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক জানান, দু‘দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য সম্প্রসারন করা ও জনগন যাতে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য সরসরি বেচাকেনা করে লাভবান হতে পারে সে লক্ষেই বর্ডারহাট করা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ৮বছর অতিবাহিত হলেও বিএসএফ ও বিজিবি’র নানান ধরনের খবরদারী ও হয়রানীসহ বিভিন্ন কারনে সীমান্ত হাটটি নিয়মিত না বসায় তা আজও জমে ওঠেনি। তবে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপঙ্কর রায় বলেন, সপ্তাহে প্রতি বুধবার সীমান্ত হাট বসে। হাটটি জমে না ওঠার অপর কারনটি হলো যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না থাকা। সরেজমিন হাটের প্রবেশ মুখে ১কিলোমিটার বেহাল কাঁচা সড়ক ও ঝুকিপুর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে হাটে যাতায়াত করতে হয়। সীমান্ত হাটের কার্ডধারী ব্যবসায়ীরা জানান, দু’দেশের ২৫টি করে ৫০টি দোকানের অনুমোদন থাকলেও বর্তমানে ভারতের ৫ থেকে ৭টি এবং বাংলাদেশের ১০ থেকে ১২ জন ব্যবসায়ী পন্য নিয়ে বসেন। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি দেশের ৩শ জন করে কার্ডধারী ক্রেতার অনুমতি থাকলেও ভারতীয় ক্রেতা নাই বল্লেই চলে।
বাংলাদেশের কার্ডধারী ক্রেতা আতাউর রহমান বলেন, তালিকায় দু’দেশের ৬৯টি পন্য বর্ডারহাটে বেচা-কেনার অনুমতি থাকলেও ভারত থেকে শুধু জিরা, সুপারী, কলা ও আদা আসে । আর বাংলাদেশের প্লাষ্টিক, ক্রোকারিজ সামগ্রী, তৈরি পোশাক, আলু ও শাক সবজী পাওয়া যায়। ফলে চাহিদা মোতাবেক পন্য না থাকায় হতাশ সীমান্ত হাটের ক্রেতারা। এছাড়া ভারতীয় ব্যবসায়ীদের হাটে মুদ্রা বিনিময়ের ব্যবস্থা থাকলেও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সে সুযোগ না থাকায় ভোগান্তিতে পরে ক্রেতারা। অপরদিকে বিজিবি ও বিএসএফ’র নানান ধরনের হয়রানীর ফলে ক্ষুদ্ধ ও বিরক্ত ক্রেতা বিক্রেতারা । এরই প্রেক্ষাপটে জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার সীমান্তে আরও একটি ‘বর্ডার ‘হাট’ হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রস্তাবিত বাগভান্ডার সীমান্ত হাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম । এসময় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার গাজী হাসান আহমেদ, কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোঃ ফেরদৌস খান, বিজিবির ব্যাটালিয়ান কমান্ডার, উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএইচএম মাগ্ফুরুল হাসান আব্বাসী উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তাবিত বাগভান্ডার সীমান্ত হাটের ওপারে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাহেবগঞ্জ সীমান্ত। ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএইচএম মাগ্ফুরুল হাসান আব্বাসী বলেন, প্রস্তাবিত হাটটি হলে ভুরুঙ্গামারী,কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলার লোকজন সরাসরি বর্ডার হাটে পণ্য বেচাকেনার সুবিধা পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *