শফিউল আলম,শফি কুড়িগ্রামঃ
এক সময়ের খরস্রোতা ধরলা নদ এখন ইরিবোরো ধান চাষের উর্ব্বর ক্ষেতে পরিনত হয়েছে। ধরলার বিশাল অববাহিকা জুরে চাষ করা হচ্ছে ইরি ধানসহ নানা জাতের ফসল। ধরলা নদে এখন আর পাল তোলা নৌকা ও মাঝির উদাস সুরে গান শোনা যায় না। জেলেরা দল বেঁধে ঝাকে ঝাকে জাল ফেলে মাছ ধরে না। পাশ্ববর্তি ভারত রাজ্য এক তরফা ভাবে নদ নদীর পানি প্রত্যাহার করায় ধরলার পানি কমতে কমতে এখন প্রায় পানি শুন্য হয়ে জেগে উঠেছে বহু বালুচর । নদের দুই পারের অনেক জেলে পরিবার বাপ দাদার পেশা ছেড়ে এখন খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে। এছাড়া বিপন্ন হতে চলেছে নদের বুকে বাস করা নানা জীববৈচিত্র। এর মধ্যে খাদ্য আর বাসস্থানের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে কয়েক জাতের পাখি। ধরলা সেতুর পশ্চিম পারের সান্ধার পাড়া গ্রামের আজিম উদ্দিন(৮০)ও মহিরন নেছা(৭০) ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্ধা জানান,গত ৫০বছরে ধরলা নদে কোনদিন ড্রেজিং বা খনন করতে তারা দেখিনি। একই গ্রামের কাশেম আলী নাইয়া বলেন, ধরলা সেতু নির্মানের আগে দীর্ঘ ৩০বছর ঘাটে নৌকা চালিয়ে সংসার চালাইছি । আগে ধরলা নদীর গভিরতা ছিল ১৫/২০ফুট এখন সেখানে কোমড় পানি। কাঁশিচর গ্রামের মতলব উদ্দিন বলেন, ধরলা সেতুর ১০০মিটার দক্ষিনে এখন হাটু পানি পাড় হয়ে আমরা চলাচল করি। ধরলায় এখন ¯্রােত বা মাছ কোনটাই নাই । কৃষক হাসমত আলী জানান,ধরলা সেতুর নীচে সে দুইবিঘা জমিতে ২৮জাতের ইরিধান চাষ করেছে । সার ও সেচ তেমন একটা দিতে হয়নি । কারন এসব জমি পলি পরে খুবই উর্ব্বর হয়েছে। ফলে, কম খরচে বিঘায় ২৪/২৫মন করে ধান পাবে বলে তারা আশা করছেন । ধরলার দুই তীরে অনেক কৃষক ইরিবোরো ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছে । স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ধরলা নদে পলি ও বালু জমতে জমতে নদের তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে । তা দ্রুত খনন করে নদের নাব্যতা ফিরে না আনলে আগামী অল্পদিনের মধ্যে ধরলা নদ হারিয়ে যাবে। ধরলা নদ বন্যার আগে খনন করার পরিকল্পনা আছে কি না এ বিষয়ে জানতে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *