হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম :
কুড়িগ্রামে এক নারী প্রতারক হিন্দু সনাতনধর্মী এক যুবককে বেকায়দায় ফেলতে তাকে মুসলিম পরিচয়ে কোর্টের মাধ্যমে ভুয়া এফিডেভিড তৈরী করে দেনমোহরের টাকার জন্য উল্টো হুমকী দিচ্ছে। প্রতারক ফেরদৌসী আক্তার কাবিননামায় ১লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ধর্মান্তরিত হওয়ার মিথ্যা কাগজপত্র পাঠিয়ে হিন্দু ওই যুবক ও তার পরিবারকে হয়রাণি করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সুখ্যাতি বালাটারী গ্রামের কুদ্দুস আলীর মেয়ে বিউটিশিয়ান ফেরদৌসী আক্তার প্রথমে নাগেশ্বরী শহরে অবস্থিত সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রিসিপশনিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিল। এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানীতে রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাদে পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট গ্রামের হরিকান্ত রায়ের ছেলে বাদলচন্দ্র রায়ের সাথে ফেরদৌসি আক্তারের আলাপ-পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে বাদলচন্দ্রের কাছ থেকে প্রায়ই টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতো সে। এরমধ্যে সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একজনের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধৃত হয়ে চাকরী হারায় ফেরদৌসি। এরপর বেকার ফেরদৌসী ফোনে বাদলচন্দ্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করত। পরে তাকে অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে বিউটি পার্লার খোলার জন্য দেড়লক্ষ টাকা ধার গ্রহন করে। এরপর থেকে ধীরে ধীরে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ফেরদৌসি। পরে ধারের টাকা পরিশোধের কথা বললে টালবাহনা শুরু করে। এরপর চাপ দিলে হঠাৎ করেই বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক বাদলচন্দ্রের মোবাইলে এফিডেভিড করে ধর্মান্তরিত হয়ে নিজেকে স্ত্রী পরিচয়ে ভুয়া বিয়ের কাবিন নামা পাঠিয়ে দেয়। এতে ভয় পেয়ে ভুক্তভোগী বাদলচন্দ্র রায় কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে আরো জানা গেছে, বিউটিশিয়ানের আড়ালে ফেরদৌসি আক্তার ১৩টি সিম কার্ড ব্যবহার করে একাধিক পুরুষের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন । বাদল চন্দ্রকে মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে রংপুরের মিঠাপুকুরে জনৈক নিকাহ রেজিস্টার কর্তৃক বিয়ের কাবিননামার কপি দেয়া হলেও সেই নামে কোন নিকাহ রেজিস্টার নেই বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
ভুক্তভোগী বাদল চন্দ্র রায় জানান, আমি প্রচন্ড ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি। একদিকে কোম্পানীর চাপ অপরদিকে মেয়েটি টাকা না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ের কাবিননামা পাঠানোয় চরম অশান্তির মধ্যে দিন পার করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফেরদৌসী আক্তারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন