হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম:
পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকার পরও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৫ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী । সোমবার বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল বের হলে ফুলবাড়ী উপজেলার প্রকাশিত তালিকায় ওই শিক্ষার্থীর রোল পাওয়া গেছে । ওই শিক্ষার্থীর নাম সজিব আলী । তার রোল নম্বর ২৪। সে চর গোরকমন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেনি সে। এ নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে গত ৩০ শে ডিসেম্বর ফুলবাড়ী উপজেলায় অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় ১৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৬৬৫জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করে। ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের ১০১ কক্ষের ২৪নং রোল নম্বরে শিক্ষার্থী সজিব আলী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেননি। ফলে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ওই ছাত্র অনুপস্থিত দেখিয়ে জেলায় তালিকা পাঠিয়ে দেন।
এদিকে সোমবার বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল বের হলে ফুলবাড়ী উপজেলায় ৪৪ ট্যাল্টেপুলে ও ৩৭ জন সাধারণ গ্রেডে বৃত্তির তালিকার কপি শিক্ষা অফিসে আসে। পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ খোঁজ নিতে গিয়ে ওই ছাত্রের রোল নম্বর জানতে পারেন। এ খবরে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। শিক্ষার্থী সজিব আলীর বাড়ী ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ড এলাকায় হুজুর আলী ও মা ছকিনা বেগমের ছোট ছেলে।
মঙ্গলবার বিকালে শিক্ষার্থী সজিব আলীর বাড়ীতে গেলে সে জানান, আমি পরীক্ষা দেইনি। আমি কিভাবে বৃত্তি পেলাম এটা সম্পূর্ণ হাস্যকর বলে মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চর-গোরকমন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আলম জানান, ৭ জন পরীক্ষার্থীকে বর্ননামূলক রোল ( ডিআর ভুক্ত) করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজন অনুপস্থিত ছিল । এদের মধ্যে সজিব আলীও ছিল অনুপস্থিত । সজিব অনুপস্থিত থাকার পরেও সে কিভাবে বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করলো কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ওই প্রতিষ্ঠানের ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাফুজ্জামান জানান, বিষয়টি শুনেছি । পরে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ওই ছাত্র পরীক্ষা দেয়নি। তার রোল নম্বর কিভাবে তালিকায় এসেছে, তা পর্যাবেক্ষণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা পর্যায় যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেই তালিকায় অনুপস্থিত থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি জেনেছি গুরুত্বসহকারে সকল নতিপত্র পর্যালোচনা করে তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *