কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কমে গেছে নদ-নদী সমুহের পানিও। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও তিস্তার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমে গেলেও ভাঙ্গন থেকে মুক্তি মিলছে না নদী তীরবর্তী বসবাসরত বাড়ী গুলির। অনেক বাড়ীঘর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীগর্ভে ভিটেমাটি হারিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ভাঙ্গন অাতঙ্কে নিদ্রাহীন এসব এলাকার মানুষজন। হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী স্কুল, কলেজ, মসজিদ সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সমুহ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী চর যাত্রাপুর এলাকার- জাহেদুল, হাফিজুর ও অাশরাফুল জানান, অামাদের এলাকার প্রায় ২০ টি বাড়ী ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে নদীগর্ভে ভেঙ্গে গেছে। বন্যার পানি কমলেও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় বাড়িঘর প্রতি মুহুর্ত অন্যত্র সরিয়ে নিতে হচ্ছে। রাতে ঘুমাতে পারছিনা ভাঙ্গন অাতঙ্কে। না জানি কখন বাড়ীঘর নদীগর্ভে চলে যায়।

চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ অাবু হানিফা জানান, বন্যার পানির গতি কিছুটা কমলেও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী খেরুয়ার চর এলাকার প্রায় ৬০টি বাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এবং সে এলাকার একটি মসজিদ ও স্কুল হুমকির মুখে রয়েছে। এছাড়া দক্ষিন খাউরিয়া গ্রামের দুইশগ্রাম এলাকার অাশ্রয় কেন্দ্রসহ ১৫টি বাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবং দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ সহ নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদ যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে তিনি জানান।

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ অাইয়ুব অালী সরকার জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে চলমান বন্যায় অামার ইউনিয়নের প্রায় ১শ টি বাড়ী ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ অাকমল হোসেন জানান, অামার ইউনিয়নের ২৫টি পরিবার ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবং হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী অনেক বাড়ীঘর। এছাড়া ১৯০৩ সালে স্থাপিত রঘুরভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় ভেঙ্গে পড়ার অাশঙ্কা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও তিস্তার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ অাব্দুল কাদের বলেন, অামরা নদীগর্ভে বিলীন হওয়া বাড়িঘর গুলির তালিকা তৈরী করতেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তাদেরকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *