মোঃ আবু হাসান,, বিভাগীয় প্রতিনাধি,,খুলনা
সকাল ১০টা থেকে স্কুল কলেজের ক্লাস হলেও রাত পোহালেই ব্যাগ ভরা বই কাঁধে দেখা মিলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের। আবার বিকেল চারটার পর সব স্কুল কলেজ ছুটি হলেও বিকাল বেলা এমন কি সন্ধার পর ও বই নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আসা যাওয়া করতে দেখা যাই, যা বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়, ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট অথবা কোচিং সেন্টারে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ভাল ফলাফল, যেন তারা মেনেই নিয়েছে পড়াশুনা করতে হলে প্রাইভেট কোচিংয়ে যেতেই হবে, বাস্তবতা তার সম্পূর্ণ ভিন্ন।

বর্তমানে প্রাইভেট টিউশনি ও কোচিং-বাণিজ্য কেশবপুরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে সবচেয়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ নানাবিধ সমস্যা ছাড়াও প্রতিটি বিষয়ে জনপ্রতি অভিবাবকদের গুনতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, এতে করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রী ও অভিবাকেরা কারন একজন শিক্ষার্থীকে একাধিক বিষয় শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে হয় যা মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।

তবে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই প্রাইভেট ও কোচিং-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের তাঁদের কাছে পড়তে বাধ্য করেন কিংবা চাপ দেন। এতে শিক্ষার্থী-শিক্ষকের স্বাভাবিক সম্পর্কের অবনতির পাশাপাশি পাঠদান-পাঠগ্রহণেও ধারাবাহিকতার বিঘ্ন ঘটছে। এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে ভালো পড়ালেখা হয় না। তাই কোচিং সেন্টার কিংবা শ্রেণী শিক্ষকদের নিকট ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

এছাড়া ও তারা অভিযোগ করে বলেন, যে সব ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস স্যারের নিকট প্রাইভেট পড়েন তারা স্যারদের অতি নজরে থাকেন এমন কি পরিক্ষা খাতা মুল্যায়নের সময় ও তাদের উপর স্যারদের সুনজর থাকে। যার ফলে বাধ্য হয়েই ছেলে-মেয়েদের কোচিং করতে অথবা প্রাইভেট পড়াতে পাঠাতে হয়। এদিকে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা মানছেন না শিক্ষকরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১২ সালে কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে। নীতিমালার অনুচ্ছেদ ৭-এ উল্লেখ আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি কোচিং-বাণিজ্য রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোচিং-বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান প্রয়োজনীয় প্রচারণা ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

অনুচ্ছেদ ১৪-এর ‘ক’ উপ-অনুচ্ছেদে বলা আছে, এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর এমপিও স্থগিত, বাতিল, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই অনুচ্ছেদের ‘খ’ উপ-অনুচ্ছেদে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের এমপিও-বিহীন শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বেতন-ভাতাদি স্থগিতসহ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একই ধরনের শাস্তি প্রদানের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে অনুচ্ছেদের ‘ঙ’ উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের শিক্ষকেরা কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ প্রয়োগ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *