চট্টগ্রাম ব্যুরো ঃ বন্দর নগরী চট্টগ্রামের আতঙ্ক এখন ভুয়া সাংবাদিক রিপন। বন্দর নগরীতে এই ভুয়া সাংবাদিক কায়েম করেছে তার চাঁদাবাজীর রাজত্ব। নাম সর্বস্ব অনলাইন টিভি চ্যানেল নেট টিভি ২৪ এর পরিচয় ব্যবহার করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। সাধারন জনগনকে কথায় কথায় র্যাব ও মিডিয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। চট্টগ্রামের ৩৮ নং ওয়ার্ডের কলসী দিঘীর পাড় এলাকায় একটি গান ডাউন লোডের দোকানকে নেট টিভির ব্যুরো অফিস হিসেবে ব্যবহার করে দেদারছে চালিয়ে আসছে তার প্রতারণা বানিজ্য। সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তার চ্যানেলের সাংবাদিক হতে হলে গুণতে হবে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা বিনিময়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও চলবে। তিনি আরও বলেন তাদের চ্যনেল ২০১৭ সাল নাগাদ স্যাটেলাইট সম্প্রচারে আসবে কিন্তু তথ্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে এক তথ্য কর্মকর্তা বলেন নেট টিভি নামের কোন চ্যানেল ২০১৭ সাল নাগাদ সম্প্রচারে আসবে এমন কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। বর্তমানে এই রিপন এলাকার যুবকদেরকে সাংবাদিক বানিয়ে দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। রিপন সম্পর্কে এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন এই রিপন একজন মোবাইল মেকানিক সারাদিন সে তার দোকানে বসে খারাপ শ্রেণীর নারীদের সাথে মেলামেশা করে থাকেন। এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায় তার দোকানের ভিতরে ছোট্ট একটি ঘর রয়েছে যেটি বাহির থেকে উপলব্ধি করা যায় না। ঐ ঘরটির ভিতরে বসে হরহামেসাই রিপন ও তার সহযোগীরা মাদক সেবন করে থাকেন। মোবাইলে রিপনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং নিজেকে আইনের উর্ধে বলে দাবী করেন। প্রায়সই রিপন নিজেকে স্বরাষ্ট মন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামালের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাছাড়া প্রায় সময় সাধারন জনতাকে ভ্রাম্যমান আদানতের ভয় দেখিয়ে থাকেন। কথায় আছে “চোরের দশ দিন গৃহস্থের একদিন” গত ৮ই মে চট্টগ্রামের ৩৭নং ওয়ার্ডের আনন্দ বাজার এলাকায় শিপ্রা রাণী দাস নামের এক মহিলার কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর সময় জনতা কতৃক গণ পিটুনী খেয়ে ঐ স্থান থেকে পলায়ন করেন রিপন ও তার সহযোগী মনির(২০)। এক পর্যায়ে শিপ্রা রানী দাস বাদী হয়ে বন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন। এই সকল ভুয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর রিপোটার্স ক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক কামরুল ইসলাম হৃদয়ের সাথে কথা বললে তিনি জানান এই ভুয়া সাংবাদিক রিপনের ব্যাপারে খুব শীঘ্রই চট্টগ্রাম বন্দর রিপোটার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনারের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করা হবে এবং এই ব্যাপারে তিনি র্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এই ভুয়া সাংবাদিক রিপনের ব্যাপারে র্যাব-(৭), এর মিডিয়া অফিসার এএসপি আমিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান এই সকল ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাদের গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে যথাসময়ে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার সচেতন নাগরিকদের এখন একটাই দাবী এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে একদিন সংবাদ ও সাংবাদিকদের উপর থেকে গণমানুষের আস্থা চলে যাবে।