চট্রগ্রাম থেকে বিশেষ প্রতিনিধিঃ মোঃ খলিলুর রহমান
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা থেকে অস্ত্র, বোমা, গ্রেনেড উদ্ধারের এক সপ্তাহের মধ্যে জেলার সীতাকুণ্ডে সন্দেহভাজন আরও দুটি জঙ্গি আস্তানা খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। সীতাকুণ্ডের নামার বাজার এলাকায় সন্দেহভাজর দুটি জঙ্গি আস্তানায় এই অভিযান চলছে। এর মধ্যে একটি আস্তানা থেকে পুলিশের ওপর হামলাও হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জানান, গোপন সুত্রে এই আস্তানা দুটির খবর পাওয়ার পর বুধবার দুপরের দিকে অভিযান শুরু হয়। সীতাকু- থানার একদল পুলিশ পৌরসভার নামারবাজার এলাকায় সুরেশ মিস্ত্রির ভবন ঘিরে রাখে। এ সময় আস্তানার ভেতর থেকে পুলিশের উপর হাতবোমা ছোড়া হয়। তবে এতে কোন পুলিশ আহত হয়নি।
পুুলিশ সুপার বলেন, ‘অপর আস্তানাটি কয়েকশ গজ দুরে। দুটি আস্তানার ভেতরেই অস্ত্র-গুলি, হ্যান্ড গ্রেনেড ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’
আস্তানা দুটির একটি ভেতরে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সঙ্গে তিন নারী ও শিশু রয়েছে। ফলে পুলিশ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযানে সীতাকুন্ডু থানা পুলিশের সাথে জেলার রিজার্ভ টিমও যোগ দিচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ থেকে বিস্ফোরক নিস্ক্রিয়করণ ইউনিটও ঘটনাস্থলের দিকে যাত্রা শুরু করেছে।
ভবনের মালিক সুরেশ মিস্ত্রি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, গত কয়েকমাস আগে ভাড়া নিয়ে ভবনে উঠেছেন ভাড়াটেরা। তারা যে জঙ্গি সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। সুরেশ মিস্ত্রির ভবন থেকে অপর একটি ফ্ল্যাটে ঘিরে রাখা আস্তানার ভবনও ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান সাংবাদিকরা।
গত ৭ মার্চ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখানে পাওয়া গ্রেনেডগুলোর সঙ্গে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা যেসব গ্রেনেড ব্যবহার করেছিল তার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হলি আর্টিজান বেকারি এবং এক সপ্তাহ পর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলা চেষ্টার পর থেকে পুলিশের পাল্টা অভিযানে নিহত হয়েছে সন্দেহভাজন ৩০ জনেরও বেশি জঙ্গি। এসব অভিযানের পর থেকে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের তেমন তৎপরতা শোনা যায়নি। তবে সম্প্রতি মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীদেরকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় তাদেরকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানে হামলা হয় গাজীপুরের টঙ্গীতে। এরপর থেকে নতুন করে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু করে পুলিশ।