মোহাম্মাদ মানিক হোসেন চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ
দিনাজপুর চিরিরবন্দরের আলোকডিহি ইউনিয়নের কেষ্টহরি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ললিত রায়ের মেয়ে এক সন্তানের জননী পুলিশের স্ত্রী মনি রায় আত্মহত্যা করেছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কাচিনিয়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল রায়ের ছেলে অশোক রায়ের সাথে মনি রায় (২২) এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পুলিশ সদস্য অশোক রায় অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক জড়িয়ে পরে। এ ঘটনার জের ধরে গত বুধবার তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। ওই দিন তারা আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত শেষে বাড়ি ফিরছিল। তারা সৈয়দপুর থেকে বাড়িতে আসার সময় দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটির সূত্রপাত ঘটে। তারা রাণীরবন্দর নামক স্থানে এসে পৌঁছলে মনি রায় পানি পান করার কথা বলে হোটেলে যায় এবং ফিরে এসে বিষ পান করার কথা স্বামীকে জানায়। ঘটনা শুনে অশোক রায় চমকে ওঠে এবং মনি রায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে সৈয়দপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক হলে উন্নত চিকিৎসা করাতে দিনাজপুর এম এ রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত প্রায় সাড়ে ১২ টার দিকে সে মারা যায়।
এলাকাবাসী জানায়, অশোক রায় আগে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় ডিউটি করত। এখন ৬/৭ মাস থেকে দিনাজপুর রেলওয়ে থানায় ডিউটি করছে।
এদিকে, মেয়ের বাবা ললিত চন্দ্র রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অশোক অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক জড়িয়ে পরে। অবৈধ সম্পর্কের বাধা দেওয়াতে সে আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। অশোক আমার মেয়ের সঙ্গে থেকেও কি ভাবে মেয়েটি গ্যাস ট্যাবলে খেয়েছে বুঝতে পারছি না। আমার মেয়ের বিষয়টি তারা রাতেই মিটমাট করার জন্য আমাকে এবং মাইক্রো ড্রাইভারকে হাসপাতালে আটকে রেখে কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে। এতে আমি রাজি হইনি। এ অবস্থায় আমি বাড়িতে খবর দিলে রাত প্রায় ৩টায় আমার বাড়ির লোকজন এসে আমাকে নিয়ে যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার ময়না তদন্ত করতে লাশ মর্গে পাঠানো হয় এবং মেয়ে হত্যার বিচার করতে আইনি প্রক্রিয়া করছে বলেও ললিত চন্দ্র রায় জানান।
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন প্রধান জানান, এটি চিরিরবন্দর থানা পুলিশ দেখছে। পরে চিরিরবন্দর থানার ওসি হারেসুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। লাশের ময়না তদন্ত হওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।