মোহাম্মদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
চিরিরবন্দরে ভরা বর্ষাতে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত হলে নদী-নালা ও জমিতে প্রয়োজনীয় পানির দেখা মিললেও নেই কোন পর্যাপ্ত চাই ব্যবহার। কৃষকরা মৌসুমের আমন আবাদ শুরু করে দিয়েছেন চলছে চারা রোপনের কাজ। আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবন চলে আসতেছে আকাশের মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। ভরা বর্ষাতে নদী নালা খাল-বিল যখন থই থই তখন উপজেলার সাতনালা, আলোকডিহি, সাইতীড়া,বিন্যাকুড়ি, তেতুঁলিয়া ও গছাহারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা মেলেনি কাঙ্খিত চাই দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য। এতে করে প্রতি বছর চাই বিক্রি ক্রমানয়ে কমেই চলছে।

উপজেলার অদূরে ঢেলাপীর,তারাগঞ্জ,ভুষিরন্দর,কাচীনিয়া,যশাই ,কারেন্টহাট ,রানীরবন্দর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার চাই যা স্থানীয় ভাষায় ডাইরকি নিয়ে বসে আছেন বাঁশের তৈরির কারিগররা। নিপুণ হাতের তৈরি এসব চাই বিক্রি হচ্ছে খুবই কম। কারিগর পরিমল জানান, চাই তৈরির বাঁশ ক্রয় করে এ কাজে বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে ছেলে-মেয়েরাও সহযোগিতা করে। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এসব তৈরি করে থাকেন তারা। এসব তৈরিতে প্রকারভেদে খরচ পড়ে ৫০ টাকা থেকে ১শত ৫০’ টাকা। আর তা বিক্রি হয় ২শত’ থেকে ৫শ’ টাকায়। কিন্তু দিন দিন কমে যাচ্ছে চাই বিক্রি । কারিগররা আরও জানান, এসব তৈরিতে আগের চেয়ে তৈরির খরচও বেড়েছে। ফলে আগের মতো আর লাভ হয়না। এমনিতে নদী- নালা ও জমিতে পর্যাপ্ত পানি হলেও নেই কোন মাছের দেখা। এছাড়া দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে চাই আর আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না। সাতনালা ইউনিয়নের মো: মতিয়ার রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমি চাই দিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কেজি মাছ ধরতাম, তা বিক্রি করতাম ৩ থেকে ৪ শত টাকা। যা দিয়ে আমার সংসার চলতো কিন্তু বর্তমানে খাল-বিল ভরাট থাকলেও দেখা মিলছেনা মাছের তাই অন্য কাজ করে চলতে হচ্ছে।

রাণীরবন্দর চাই ব্যবসায়িক গোড়া জানান, আগের মত চাই বিক্রির চাহিদা আর দেখি না । প্রতি বছর বর্ষার ভরা মৌসুমে চাই পাইকারি দামে কিনে, আমি বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে তাকি। বাশেঁর দাম বেশি হওয়ায় চাই বিক্রিতে আগের মত লাভ হয় না প্রতিটি ছোট বড় চাই বিক্রি করে ৪০ থেকে ৮০ টাকা করে লাভ হয়। তিনি আরো জানান, খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও দেশী মাছের আকাল হওয়ায় চাই বিক্রি খুবই কম।

যেখানে মৎস্য সম্পদ বেকারত্ব দূরীকরন আমিষের অভাব পূরণসহ মাছ চাষে দেশের উন্নয়নের অগ্রধিকার রাখবে সেখানে দিনে দিনে কমছে মাছ চাষ। চাষাবাদে প্রয়োগ করা হচ্ছে অতিরিক্ত কীটনাশক যার ফলে বিলুপ্তি হচ্ছে সু-স্বাধু দেশী প্রজাতির মাছ। হারিয়ে যাচ্ছে নিপুণ হাতের তৈরি চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *