চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে রবিবার ভোর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র অষ্টমী স্নান শুরু হয়েছিল। লাখো লাখো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পদভারে মুখোরিত ছিল ব্রহ্মপুত্র তীর। সুত্র জানায় শনিবার সকাল ১০টা থেকে রোববার সকাল ৭টা ৫২ মিনিট অষ্টমী প্রহর থাকলেও রোববার সকাল ৬টা ১০ মিনিট থেকে সকাল ৭টা ৫২ মিনিটের মধ্যে স্নানের উত্তম সময়। প্রায় ৩লাখ পূণ্যার্থীর পদভারে মূখরিত হয়ে উঠেছিল চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা। হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র,হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে পূণ্যার্থীরা কৃপা চান ব্রহ্মার। স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পূণ্যার্থীরা। গত কয়েকদিন থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পূণ্যার্থীরা ভিড় জমান চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। সড়ক পথে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, নচিমনে, অটোতে ও মোটরগাড়ি করে। নদী পথে ট্রলার ও নৌকাযোগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে পূণ্যার্থীরা সমবেত হন চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। উৎসব কমিটির নেতারা বলেন প্রতি বছরের মত এবারও ভারতসহ ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুলসংখ্যক পূণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন স্নান উৎসবে। কোন নির্দিষ্ট ঘাট না থাকায় উমুক্ত স্নানঘাটের মাধ্যমে পূণ্যার্থীরা স্নানপর্ব সম্পন্ন করেছেন। স্নান ও মেলা উপলক্ষে রমনা ব্যঙ মারা ঘাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বালুচর এলাকায় বসেছে সার্কাস ও ভাওয়াইয়া গানের আসর। বাঁশির সুর, ঢোলের শব্দ ও নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল চরাঞ্চল। স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে দুইদিন ব্যাপী লোকজ মেলা। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা মুরাদ হাসান বেগ জানান পূণ্যার্থীদের কল্যাণে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঘাটের পাশেই নারী দের কাপড় বদলানোর জন্য বুয়ের ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৩০/৪০টি ধর্মীয় সামাজিক ও সেবা মূলক সংঘঠন ক্যাম্প খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশী পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপর দিকে স্নান উৎসব উপলক্ষে উপজেলা চেয়াম্যান মোঃ শওকত আলী সরকার বীর বিক্রমসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ স্নান উৎসব কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। কথা হয় ¯œান দিতে আসা শ্রী লতা রানী, বুদ্ধবেদ চক্রবত্তি সহ অনেকের সাথে। তারা অভিযোগ করে বলেন গতবারের চেয়েও এবারের অবস্থা কিছুটা ভালো হয়েছে তবে গোছলের জন্য নিদিষ্ট কোন ঘাট না থাকায় কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে। উৎসক কমিটির আহবায়ক বিষু কুমার বর্মণ জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও নেপাল থেকে পুণ্যার্থীরা অষ্টমী স্নান মেলায় আসবে। এবার তিন লাখেরও বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *