কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ আজগর আলী সরকারের (নৌকা) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী তার পরাজয়ের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, গত ৩১ জানুয়ারী সোমবার উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পযন্ত ৯টি কেন্দ্রে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটি মেশিন) ভোট গ্রহণ করা হয়। শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।নির্বাচনে রমনা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ গোলাম আশেক (মোটর সাইকেল) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি মোট ভোট পান ৪৬৩৬ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মোঃ জোবাইদুল ইসলাম সুইট (অটোরিস্কা) পেয়েছেন ৪৬১৪ ভোট। এ ইউনিয়নে মোট ২২৫০৭ জন ভোটারের মধ্যে ১৬১২৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ আজগর আলী সরকারের (নৌকা) পান ১১৫৮ ভোট। আ,লীগ মনোনিত প্রার্থীসহ আরও ৫ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তারা হলেন, গাজী মোঃ শিবলী আকন্দ (চশমা) ২০০ ভোট, ওবাইদুল হক (টেলিফোন) ৩৬৫ ভোট, মোঃ নুর আলম (টেবিল ফ্যান) ২২৫ ভোট, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ (হাতপাখা) ৫৪৮ ভোট ও হাবিবুর রহমান (আনারস) ৮০৩ ভোট।মোট সংগ্রহের এক অষ্টমাংশের কম ভোট পাওয়ায় উপজেলার বাকি ৪ ইউনিয়নেও ১৪ জন প্রার্থী জামানত হারান।
এরমধ্যে থানাহাট ইউনিয়নে ৮ জনের মধ্যে ৫ জন। মোট ৩০৭৩৭ জন ভোটারের মধ্যে ২১৮০১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক মিলন। তিনি নৌকা প্রতিকে ৭০০২ ভোট পান। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল করিম খুশু (চশমা) পান ৪৯৮৬ ভোট। মোট ৮ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারান ৫ জন। তারা হলেন, মোঃ আমিনুল ইসলাম (ঘোড়া) ৬৯৬ ভোট, মোঃ জাহেদুল ইসলাম (গামছা) ৮৮ ভোট, জোবাইদুল ইসলাম (হাতপাখা) ১৪৭৯ ভোট, হালিমুজ্জামান বাবলু (আনারস) ১৩১৮ ভোট ও মোঃ হুমায়ুন কবীর (মোটর সাইকেল) ২১৩১ ভোট।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি নৌকা প্রতিকে ৪১৩৬ ভোট পান। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ সাজেদুল ইসলাম (আনারস) পান ৩৪০৫ ভোট। মোট ১৮০৩৭ জন ভোটারের মধ্যে ১৪২৬১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ইউনিয়নে মোট ৮ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারান ৪ জন। তারা হলেন, মোছাঃ জাহানারা বেগম (ঘোড়া) ৫৩ ভোট, মোঃ আতিকুর রহমান (অটোরিস্কা) ৭৯৫ ভোট, মোঃ এরশাদুল হক (হাতপাখা) ২৪৩ ভোট ও শিমুল মন্ডল (চশমা) ৬০ ভোট।

চিলমারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। তিনি চশমা প্রতিকে ৩১৭৪ ভোট পান। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ প্রার্থী গাওছল হক মন্ডল (নৌকা) পান ২৭৪৭ ভোট। মোট ৭০৭১ জন ভোটারের মধ্যে ৬০৭৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ইউনিয়নে মোট ৩ প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা রিয়াজুল হক (আনারস) জামানত হারান। তিনি মোট ১৫৮ ভোট পান।
অষ্টমীর চর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ সোহরাব হোসেন। তিনি আনারস প্রতিকে ৪৫৯৫ ভোট পান। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু তালেব ফকির (নৌকা) পান ২৯২৫ ভোট। মোট ১১৮৭০ জন ভোটারের মধ্যে ৯৯৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ইউনিয়নে মোট ৪ প্রার্থীর মধ্যে ২জন প্রার্থী জামানত হারান। তারা হলেন, মোঃ নজরুল ইসলাম (ঘোড়া) ২৪৩১ ভোট ও মোঃ নজরুল ইসলাম (চশমা) ৩১ ভোট।
রমনা মডেল ইউনিয়নেরআওয়ামী লীগের এই প্রার্থী আজগর আলী বলেন,তার পরাজয়ের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের অসহযোগিতাকে না করায় দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, মোট ভোট কাস্টের এক অষ্টমাংশ না পাওয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *