ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে পিয়াইন নদীর গোয়ালগাঁও এলাকা থেকে কতিপয় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের যোগ সাজসে প্রতিদিন সকাল হতে বিকাল পর্যন্ত বালি শ্রমিকরা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হাটু ও কোমর সমান পানি হতে কখনো বালতির মাধ্যমে আবার কখনো জনমানুষের অগোচরে ড্রেজিং মেশিন লাগিয়ে বালি উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়ালগাঁও গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পিয়াইন নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর আস পাশ এলাকার মসজিদ, কবরস্থান, রাস্তা ও গার্ডওয়াল সহ প্রায় শতাধিক বসত ঘর বিলিন হয়ে গেছে। এতে গ্রামের নদী তীরের কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় বসবাস করলেও স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশিষ্টদের কোন গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। জানা গেছে, প্রতিদিন নদীর আসপাশ এলাকায় বসবাসরত লোকজন তাদের বসত ঘর ও রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়ায় বালি উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নিষেধ দিলেও বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা এসব বাধা নিষেধ মানছেন না। এতে নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি ও নদীর তীরবর্তি মানুষজন আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাস্তুহারা হতদরিদ্র মানুষকে নিরাপদ আবাসনের আওতায় এনে বাসগৃহ নির্মান করে দিলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা নদী হতে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে হাজারো দরিদ্র পরিবারের মানুষের বাসগৃহ নদী গর্ভে বিলিন করে দিলেও সংশিষ্ট সরকারী বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে অচিরেই গোয়ালগাঁও গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে কয়েক শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে যাওয়ার আসংঙ্খা করছেন স্থানীয় বাসীন্দারা। বালি শ্রমিকরা প্রতিদিন অপরিকল্পিত ভাবে বালি উত্তোলন করে কাঠের নৌকা, বাল্কহেড ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা বোঝাই করে অন্যত্র বিক্রি করার ফলে পাহাড়ী ঢলের পানিতে স্থাপনা গুলি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়বে। ছাতকের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোয়ালগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ্ব বিলাল মিয়া জানান, নদী হতে বালি উত্তোলন করায় আমার বাস ভবনের ফ্লোরে এবং দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়ায় আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে বাধ্য হয়ে ছাতক শহরে বসবাস করতে হচ্ছে। আমার বাড়ির সামনের রাস্তাটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পথচারিরা আমার বাড়ির ভিতর দিয়ে চলাচল করছেন। এছাড়াও গ্রামের অসহায় কয়েকটি পরিবার নদী ভাঙ্গনের ফলে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা সামছুজ্জামান রাজা জানান, আমাদের বাপ দাদার স্থাপিত পারিবারিক কবরস্থানটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় আমরা শংকিত রয়েছি। এব্যাপারে গ্রামের প্রায় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের স্বাক্ষর সহ আলহাজ্ব বিলাল মিয়া বাদী হয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি সহ ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, স্থানীয় নদী গুলো রক্ষার সার্থে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন বন্ধে শীঘ্রই ভ্রাইম্যমান আদালতের অভিযান শুরু করা হবে। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজিম উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব। ##