ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

স্ত্রী অসুস্থ’ এবং তার সন্তান হবে না এমন অজুহাতে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন শিক্ষক। এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়িহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল করিম। তার বয়সে ৫০ এমন ঘটনায় তোলপাড় চারদিকে। তিনি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। ওই ছাত্রীর বয়স ১৫ বছর ১০ মাস।তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানের মৌলভী শিক্ষক।
তবে বাল্যবিবাহ অভিযোগে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে
মোলামগাড়িহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এক ছাত্রীকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেছেন। ওই ছাত্রীদের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ এলাকায়। কিন্তু তার বাবা মোলামগাড়ীতে একটি কোল্ড স্টোরে চাকরি করে। সেই সুবাদে তারা সেখানেই বসবাস করেন।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের বিষয়টি জানার পর গত ১২ জুন ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্কুলে আসা নিষেধ করে তার জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মেয়েটির বয়স ১৮ বছর পার হয়নি। ১৫ বছর ১০ মাস বয়স হয়েছে। এটি বাল্যবিয়ের মধ্যেও পড়ে। আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশে এটি উল্লেখ করেছি।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক একটি মিটিং ডেকে আমাদের ম্যানুয়াল অনুযায়ী তাকে শোকজ করেছি।
বিয়ের কথা স্বীকার করে শিক্ষক আব্দুল করিম বলেন, আমার আগের স্ত্রীর সন্তান নেই। তাই পারিবারিকভাবে গত তিন মাস আগে বিয়ে করেছি।
বাল্যবিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আরও পরে বিয়েটা করা হতো। কিন্তু এখন হয়েই গেছে। প্রতিষ্ঠান থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। আমি ছুটিতে আছি, এজন্য বিদ্যালয়ে যাই না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, ও-ই শিক্ষক মেয়েটি প্রেমের জালে ফাসিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে প্রায় ৩ মাস আগে। মেয়েটির পরিবার স্টোরে বসবাস করে বিধায় তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। তিনি মৌলভী শিক্ষক, তিনি এমন কাজ কাজ করে শিক্ষক জাতির কলংকিত অধ্যায়ের সুচনা করেছেন। তাছাড়া প্রথম বউয়ের অনুমতি তিনি নেননি। তিনি একই সাথে ২টি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি পরীক্ষার হল সচিবের দায়িত্ব পালন করেন এবং ২ প্রতিষ্ঠান থেকে বিল তোলেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি জেনেছি, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উনাকে শোকজ করেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *