খাদেমুল ইসলাম তেতুলিয়া থেকে;
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৫ নং বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের
শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসায় নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া পদে ২০ লাখ টাকা ডনেশন নিয়ে নিয়োগ
বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত মাদ্রাসার
সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির ব্যবস্থাপনা সভাপতির বিরুদ্ধে
এ ঘটনায় মাদরাসাটির সুপারিনটেনডেন্ট বদরুল আলম সরকার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো; আমিন আলীর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী তিনি
ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সোমবার সকালে

আমরণ অনশনে নেমেছেন এক চাকরী প্রার্থী ভুক্তভোগী পরিবার।

তাদের অভিযোগ, নৈশ্য প্রহরী পদে আগেই উৎকোচ নিয়ে অপরজনকে গোপনে চাকরি প্রদান করে
নিয়োগ না পাওয়ার কারনে
এই অনশন করছেন। গত শনিবার ২৫ (নভেম্বর) বিকেলে কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে মাদরাসাটির নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগে মাদরাসাটির দাতা সদস্য তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহেলকে নিয়োগ দেওয়ার কথা । কিন্তু সার্কুলেশনের আগেই দফায় দফায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছে মাদরাসার কমিটি নিয়োগ না দেওয়ায় সকালে মাদরাসার অফিস কক্ষ তালা মেরে দেন ভুক্তভোগীরা। অফিস কক্ষের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়ে জ্ঞান হারান সোহেলের মা আরজিনা বেগম। গতকাল রোববার সকালে ভুক্তভোগী পরিবারটি মাদরাসার অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দিলে বার্ষিক পরীক্ষার প্রথম পরীক্ষা সকাল ১০টায় হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। গোপন নিয়োগে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্য করে গা ঢাকা দিয়েছেন মাদরাসার অভিযুক্ত
সুপার ও সভাপতি। এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহার নির্দেশনায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো; শকত আলী
ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বিকেল তিনটায় পরীক্ষা শুরু করা হয়। বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে স্থানীয় ও অভিভাবক মহলে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মাদরাসার সুপার ও সভাপতি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

আমরণ অনশন করা ভুক্তভোগী সোহেলের মা আরজিনা বেগম ও বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, আমরা মাদরাসার দাতা সদস্য। এ মাদরাসার নৈশ প্রহরী পদে আমার ছেলেকে নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। গত বছর থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মাদরার সুপার বদরুল আলম সরকার ও সভাপতি মিলে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু গতকাল সভাপতির ভাইয়ের ছেলেকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছে। তারা কেন আমাদের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করলো। এজন্য উপজেলা ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, মাদরাসার নৈশ প্রহরী পদে চাকরি দেওয়ার নামে দফায় দফায় এই ভুক্তভোগী পরিবারটির কাছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়েও নিয়োগ না দেওয়ায় কাজটি তারা ঠিক করেননি।

সোহেল রানা জানান, আমার পরিবারের কাছ থেকে আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চাকরি বিজ্ঞপ্তির আগেই টাকা নিয়েছেন। চাকরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমাকে আবেদন করতে বলা হয়। আবেদন করি ও পরীক্ষাও দেই। কিন্তু আমাকে নিয়োগ না দিয়ে বেশি টাকা বাণিজ্য করে এই মাদরাসার সভাপতি তার ভাইয়ের ছেলেকে নিয়োগ দিয়েছেন। কেন আমাদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করা হলো। এজন্য নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে মাদরাসাটির সুপারিন্টেন্ডেন্ট বদরুল আলম সরকার ছুটিতে থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিন আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি জেনে ছুটে এসে ভুক্তভোগীদের বুঝিয়ে পরীক্ষা শুরু করা হয়। বিষয়টি প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। নিয়োগে অনিয়ম বা বাণিজ্য হয়েছে এরকম তথ্য প্রমাণের সত্যটা পেলে প্রশাসনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদরাসার তালা মারার বিষয়টি অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে খুলে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *