আশানুর রহমান আশা বেনাপোল
চিকিৎসা সেবায় ভারতে গিয়ে গত ১৬ দিনে ভারত থেকে ফিরেছে প্রায় ৯ হাজার বাংলাদেশি। এর মধ্যে ১৭ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে।
ফিরে আসা যাত্রীদের বেনাপোল ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে কাগজ পত্র পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
এছাড়া আরটিপিসিআর সনদ না থাকায় সন্দেহ ভাজন যাত্রীদের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করেও পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে।
এতে বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এপথে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। করোনা পরীক্ষায় বার বার অতিরিক্ত অর্থ গুণতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
তবে সতর্কতাই মিলতে পারে মুক্তি এমন মন্তব্য যাত্রীদের। স্বাস্থ্যকর্মীরাও দিচ্ছেন সচেতনতার নানান পরামর্শ।
জানা যায়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে একমাত্র বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে স্থলপথে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত সচল রয়েছে।
ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় দেশের অন্যান্য স্থলপথে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সায়মিক বন্ধ। বর্তমানে ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে গত বছরের জুলাইয়ের পর ইস্যুকৃত নতুন ভিসা আর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর থেকে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ লাগছে।
এপথে যারা যাতায়াত করছেন তাদের ৯৫ শতাংশ মেডিকেল ভিসায়। ৫ শতাংশ বিজনেস, স্টুডেন্ট আর কুটনৈতিক ভিসায় যাতায়াত করছে। দুইবার করোনা পরীক্ষায় তিন হাজারেরও অধিক টাকা খরচে বেশ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা সেবীদের।
এদিকে করোনার ভয়াবহতা যেমনি বাংলাদেশে বিরাজ করছে তেমনি ভারতেও একই অবস্থা। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কোন লকডাউন নেই।
বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাচ্ছেন সম্প্রতি তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে দেখা গেছে। এছাড়া ফেরত আসা সন্দেহভাজন যাত্রীদের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করেও মিলছে করোনা পজিটিভ।
ভারতগামী যাত্রী আরিফুল জানান, চিকিৎসার জন্য মাঝে মধ্যে ভারতে যেতে হয়। চিকিৎসা করতে টাকা প্রায় শেষ হয়ে যায়। দুইবার করোনা পরীক্ষায় এত টাকা খরচ করে অসহায় হয়ে পড়তে হয়।
ভারত ফেরত যাত্রী রহমান জানান, আগে টেনশন মুক্ত ভাবে ভারতে যাতায়াত করতেন। কিন্তু এখন একের পর এক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তারা আতঙ্কিত।
তবে সতর্কতা নিয়ে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে যেতে হচ্ছে। তবে আমি মনে করি যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যায় তবে করোনামুক্ত থাকা সম্ভব।
ভারত ফেরত যাত্রী আকাশ বলেন, বাংলাদেশের মত ভারতেও করোনা সংক্রমণ অবস্থা ভয়াবহ হলেও বিশেষ করে পশ্চিম বঙ্গে কোন লকডাউন নেই।
তাই যারা বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারতে যাচ্ছেন তাদের অবশ্যই সচেতন হয়ে চলাফেরা করা দরকার। এতে সে যেমন নিরাপদ থাকবে তেমনি আমাদের দেশও নিরাপদ থাকবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সৈয়দ মশিউর রহমান জানান, ভারতে গিয়েও যাত্রীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানতে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
করোনা ও অন্ধ প্রদেশের অজ্ঞাত ভাইরাস প্রতিরোধে ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে সতর্কতা জারি রয়েছে।
গত ১৬ দিনে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত থেকে ফিরে আসা ৮ হাজার ৯৫৫ জন বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জন ছিল করোনা আক্রান্ত।
এছাড়া আরটিপিসিআরের নেগেটিভ সনদ না থাকা এমন ১০৬ জনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করেও একজনের করোনা পজিটিভ মিলেছে।