চট্টগ্রাম ব্যুরো চীফ
“দিদার মার্কেট এর মোড়” কোতোয়ালি, চকবাজার এবং বাকলিয়া এই তিন থানার সংযোগ সড়ক হওয়ায় প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে গুরুত্বপূর্ণ এই সংযোগ সড়কে। ছাত্র-ছাত্রী, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী, সাধারণ জনগণ এবং কোমলমতি শিশুদের স্কুলে যাতায়ত করে এই সংযোগ সড়কে। ব্যস্ততম এই সড়কে দিনে এবং রাতে সমান তালে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মরণঘাতি অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা।
শুধু দেওয়ান বাজার থেকে দিদার মার্কেট এই আধা কিলোমিটার রাস্তায় রয়েছে স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা এবং সরকারি স্টাফ কোয়াটারসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই সামান্য দুরুত্ব রাস্তায় ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটো রিকশার তান্ডব বেশ উদ্বেগ জনক।
উক্ত রাস্তাটিতে রয়েছে স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “সিএন্ডবি কলোনি কে জি এন্ড হাই স্কুল”। স্কুল ছুটি হলে রাস্তা পার হওয়ার সময় ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার দুর্ঘটনার সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন প্লে থেকে নার্সারিতে পড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। স্কুল ছুটি হলে ছেলেমেয়েদের রাস্তা পার করাতে বিপাকে পড়েন অভিবাবকরা। অনেক সময় খোদ অভিভাবকরাও দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছেন।
শাহিনা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের রাস্তা পার করার সময় খুব বেশি আতঙ্কে থাকি, কখন জানি অটোরিকশা এসে গায়ের উপর তুলে দেই। অটোরিকশা গুলো খুব বেপরোয়াভাবে চলাচল করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শান্তিনগর এলাকায় সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কথিত কিছু শ্রমিক লীগ নেতার ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ অটো রিক্সার গ্যারেজ। দেশের একাধিক গণমাধ্যমে এই এলাকার অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার টোকেন বানিজ্যের মূল হোতাসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসলেও রহস্যজনকভাবে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন।অধিকাংশ গ্যারেজে নেই কোনো বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে চলে ব্যাটারির চার্জ। এর ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা না থাকায় যাত্রীদের সাথে চালকদের ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। অদক্ষ রিকশা চালকদের অনেকেই জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।
অটোরিকশার মালিকেরা অদক্ষ, মাদকসেবী এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে তুলে দিয়েছেন এই মরনঘাতি অবৈধ অটো রিক্সা। অধিকাংশ অটোরিক্সার গ্যারেজে চলে মাদক সেবন। মাদক সেবন করে অটোরিকশা চালিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় উশৃংখল কিছু চালক। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরাগতিতে নিয়ে নেন ইউ টার্ন। ফলে ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক বছর আগেও দিদার মার্কেটের মোড়ে ছিল তিন চাকার বেবি টেক্সির স্ট্যান্ড। এখন সেই স্ট্যান্ডটি দখল করে নিয়েছে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা। যত্রতত্র ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা পার্কিং এর ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সকেও এরা সাইট দেয় না। সন্ধ্যার পরে এদের গতি আরো বেড়ে যাই। এছাড়া রাস্তার দুই পাশে ভাসমান ভ্যান গাড়ির জন্যে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে এসেছে। মনে হয় বড়সড় দুর্ঘটনা হলে প্রশাসনের টনক নড়বে, এখন কারোর কোন মাথা ব্যাথা নেই।
এ বিষয়ে ট্রাফিক টিআই এডমিন অনিল চাকমার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।