নূর-ই-আলম সিদ্দিক,নাগেশ্বরী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
চলতি ইরি বোরো মৌসুমে নাগেশ্বরীতে ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি উপজেলা কৃষি বিভাগের। উৎপাদনে ব্যয়ের তুলনায় আয় (বিক্রিতে ধানের ন্যায্য মূল্য) না থাকায় কৃষকেরা ঝুঁকে পড়ছেন অন্য ফসলে। ফলে এর প্রভাব পড়েছে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে। তাই ধান উৎপাদনে অর্জিত হয়নি উপজেলা কৃষি বিভাগের লক্ষমাত্রা। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- চলতি ইরি বোরো মৌসুমে এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫০০ হেক্টর জমি। ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় উৎপাদন হয়েছে ২৪,৫০০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০০ হেক্টর কম। বিশিষ্ঠ জনের অভিমত- ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে কৃষকেরা ধান উৎপাদন থেকে বিমুখ হলে এর নীতিবাচক প্রভাব পরতে পারে জাতীয় খাদ্য তালিকায়। সরেজমিন উপজেলার কেদার,বল্লভেরখাস,কচাকাটা,নুনখাওয়া ও নারায়নপুর ইউনিয়ন গিয়ে জানা যায়- আমন মৌসুমে এ অঞ্চলটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বন্যা সহ অতি বৃষ্টি/অনাবৃষ্টি ও খরার কবলে পড়ায় আশানুরুপ ফসল ঘরে তুলতে পারেন না আমন চাষিরা,যার প্রভাব পরে পরবতর্ী সময়ে তাদের জীবন ও জীবিকায়। অন্যান্য সময়ের তুলনায় ইরি বোরো মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তুলনামূলক কম থাকায় ফলে এখন বোরোতেই বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে কৃষক। তাই কৃষি নির্ভর এ কৃষকগুলো তাদের তাদের পরিবার পরিজনের জীবন ও জীবিকা নির্বাহে ধানে লোকসান জেনেও এগিয়ে এসেছেন বোরো চাষাবাদে। আবার অনেকেই গত বন্যার ক্ষতি পুশিয়ে নিতে আশায় বুক বাঁধছেন ধানের প্রতিটি চারায় চারায়। সে সাথে স্বপ্ন দেখছেন ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে তাদের পরিবার পরিজনের জীবন ও জীবিকার পথ সুগম করার। জানতে চাইলে অনেকের মত উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের বোরো চাষী আজিবর রহমান বলেন- গতবার ধান আবাদ করতে গিয়া অনেক লস্ খাইছি ভাই! কিন্তু আবাদ না কইরা কই যাই-আমার তো আর ব্যবসা বাণিজ্য নাই! আবাদ না করলে বৌ বাচ্চারে খাওয়ামু কি! তাই বৌ বাচ্চারে বাঁচাইতে লস্ দিয়া আবাদ করি!
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উৎপাদনে উপজেলা কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার কারণ হিসাবে ‘ধানের চেয়ে ভুট্টা উৎপাদনে খরচ কম এবং ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় এবার অনেকেই বোরো চাষ না করে ভুট্টা আবাদ করেছেন তাই লক্ষ্যমাত্রার একটুখানি ঘাটতি হয়েছে-জানতে চাইলে এমনটি জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামসুজ্জামান ।