নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:-

চলতি আমন মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াইকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বাঁশ শিল্পীরা। ধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুমে বাঁশের তৈরী বিভিন্ন বস্তুর চাহিদা বাড়ে। এর মধ্যে কুলা ডালি, ধারাই,চালুনি অন্যতম। এসব সরঞ্জাম তৈরীতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নের পাটনির পাড় গ্রামের বাঁশ শিল্পীরা। পরিবারের ছোট- বড়, নারী- পুরুষ সবাই ব্যস্ত বাঁশ দিয়ে ডালি, কুলা,ধারাই তৈরীতে। কেউ বাঁশ কেটে ছোট ছোট টুকরো করছেন,কেউ সেই টুকরো থেকে চটা তুলছেন আবার কেউবা সেই চটা বুনে তৈরী করছেন বিভিন্ন ব্যবহার্য্য সরঞ্জাম। এসব সরঞ্জাম বিক্রি করেই চলে এ পাড়ার পরিবারের মানুষের সংসার।

বল্লভের খাষ ইউনিয়নের পাটনির পাঠ গ্রামের স্বপন কুমার বলেন, প্রতিবছর ধান তোলার মৌসুমে বাঁশের তৈরী জিনিসের কদর বাড়ে। তাই এ সময়ে তাদের পরিবারের সকলের ব্যস্ত থাকতে হয়। এসময়ের আয় দিয়ে সারা বছর চলতে হয় তাদের। তিনি আরো জানান, আগে মতো আর লাভ হয়না বাশের তৈরী জিনিস বিক্রি করে। এখন একটি ভালো মানের বাঁশ কিনতে ২ থেকে ২শ ৫০টাকা গুনতে হয়। সেই বাশ দিয়ে বড়জোর চারটি কুলা তৈরী করা যায়। প্রতিটি কুলা ৮০ থেকে ৯০টাকা বিক্রি করতে হয়। ফলে পরিশ্রমের দাম উঠে না।

চম্পা রাণী বলেন, বাঁশ কিনে সরঞ্জাম তৈরী করে পাইকারী বিক্রি করলে তেমন লাভ থাকে না। বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে পারলে খিছুটা লাভ থাকে। আগে এসব করে সংসার চললেও এখন আর চলে না। বাজারে সব জিনের দাম বাড়ায় এখন এই কাজের আয় দিয়ে সংসার চলে না। দুলাল চন্দ্র জানান, আগের মতো ডালি,কূলার চাহিদা নেই। এখন প্লাষ্টিকের বিকল্প জিনি বাজারে পাওয়া যায়। ফলে আমাদের তৈরী জিনিসের কদর কমেছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেছেন। আমরা কয়েক ঘর বাপদাদার এ পেশা আকড়ে ধরে আছি। তিনি আরোও জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চলে অনেকের সংসার। অনেকের সারা বছর সংসার চলে অভাবের মধ্য দিয়ে।

লালু চন্দ্র,অঞ্জিলা রাণী জানান, সরকারী বা বেসরকারী কোন সহযোগীতা তার পান না। সহযোগীতা পেলে এ শিল্পের প্রসার ঘটত। তারা ভালোভাবে জীবনধারণ করতে পারতো।

বল্লভের খাষ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আকমল হোসেন জানান, সরকারী বিভিন্ন প্রকার সহযোগীতা পাটনির পাঠ গ্রামের মানুষদের করা হয়। তবে এসব সহযোগীতায় তাদের করে খাওয়ার মতো কিছু হয় না। এ শিল্পকে বাঁচাতে হলে সরকারী বেসরকারী অর্থ প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতা প্রয়োজন, বিশেষ করে কুটির শিল্প নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *