কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক যুবতী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণের সাথে জড়িত দুই যুবক ও ধর্ষণে সহায়তাকারী এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপর একজন সহায়তাকারী পলাতক রয়েছে। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকালে নাগেশ্বরী পৌরসভার সাঞ্জুয়ারভিটা নামক গ্রামে।
ধর্ষণের শিকার যুবতী পরিবারের লোকজন জানান, বুধবার বিকাল তিনটার দিকে ওই যুবতী মায়ের সাথে অভিমান করে বাশেরতল জামতলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের অন্তাইয়ের পাড় গ্রামে খালার বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়। বাড়ি থেকে বের হয়ে নাগেশ্বরীর ভাই ভাই মোড় পার হলে পূর্ব পরিচিত মালভাঙ্গা গ্রামের মৃত নুরুন্নবী মিয়ার ছেলে খোকা মিয়ার সাথে দেখা হয়। এসময় খোকা মিয়া তাকে জিজ্ঞাসা করে সে কোথায় যাচ্ছে। উত্তরে ওই যুবতী বলে সে খালার বাড়িতে যাচ্ছে এবং সেখানেই রাতে থাকবে। এসময় খোকা তাকে মটরসাইকেলে পৌছে দেয়ার কথা বলে তার প্রতিবেশী মৃত আইনুল্লার ছেলে মূসা মিয়াকে ডেকে আনে। পরে মূসার মটরসাইকেলে ওই যুবতীকে তুলে তারা সাঞ্জুয়ারভিটা গ্রামের শাহ আলমের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে যুবতীকে দুজনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আভিযোগ রয়েছে শাহ আলম ও তার স্ত্রী খুশি বেগম নিজ বাড়িতে বহুদিন থেকে মেয়ে দিয়ে অসামজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। এদিকে ধর্ষণের শিকার যুবতীকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দিয়ে দুইজনই চলে যায়। পরে যুবতীকে শাহ আলম ও তার স্ত্রী খুশি বেগম একটি ঘরে তালা দিয়ে বন্দি করে রাখে।
পরে অনেক খোঁজাখুজির পর ওই যুবতির বাবা লোকজনের সহায়তায় শাহ আলমের বাড়ি হতে রাত ৮টার দিকে মেয়েকে উদ্ধার করে। ওই রাতেই ধর্ষণের শিকার যুবতির বাবা নাগেশ্বরী থানায় খোকা, মূসা, শাহ আলম ও তার স্ত্রী খুশি বেগমের নামে অভিযোগ করলে পুলিশ বৃহস্পতিবার ভোরে ধর্ষণের সাথে জড়িত খোকা ও মূসাসহ ধর্ষণে সহায়তা করায় খুশি বেগমকে গ্রেফতার করে। তবে শাহ আলম পলাতক রয়েছে।
ধর্ষণের শিকার মেয়ের বাবা জানান, আমার মেয়ে সহজ সরল, হাবাগোবা প্রকৃতির। খোকা ও মূসা আমার মেয়ের সম্পর্কে চাচা হয়। তাই ওদের মটরসাইকেলে উঠেছে। তারা দুজন মেয়েটাকে নিয়ে নির্যাতন করেছে আবার ওখানেই বিক্রি করে দিয়েছে। আমার মেয়ের সামনেই অন্য ছেলেদের কাছ থেকে শাহ আলমের বউ ১০হাজার টাকা নিয়েছে। মেয়ে সব কিছুই আমাকে জানিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
নাগেশ্বরী থানার ওসি (তদন্ত) সারোয়ার হোসেন জানান, এ বিষয়ে চার জনের নামে মামলা হয়েছে। রাতেই এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই যুবক ধর্ষণের সাথে জড়িত। অপরজন একজন নারী। তিনি সহায়তাকারী। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।