কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলাধীন ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এসিড হামলার শিকার একই পরিবারের পিতা ও কন্যা এখন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলাধীন ভবানীপুর এলাকার মৃত ছফর উদ্দিনের পুত্র অবসর প্রাপ্ত সার্জেন্ট মোঃ হাবিবুর রহমান তারই পার্শ্ববর্তী গুঞ্জাবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ২০১৬ সালে ভবানীপুর মৌজার ১৬ শতক জমি মেয়েকে ক্রয় করে দেন। গুঞ্জাবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র শহিদুল ইসলাম জমি বিক্রয় করলেও পরবর্তীতে দখল বুঝিয়ে দেয়ার কথা বলে দীর্ঘ সময় ধরে টালবাহনা করে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে উক্ত জমির ক্রেতা অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোঃ হাবিবুর রহমানের কন্যা মোছাঃ জেসমিন নাহার হ্যাপী দীর্ঘদিন যাবৎ তার ক্রয়কৃত জমির দখল না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন এবং নাগেশ্বরী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। কিন্তু কোন কিছুকেই তোয়াক্কা না করে শহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন পেশী শক্তির বলে সমস্ত অন্যায় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এদিকে ক্রয় সূত্রে জমির প্রকৃত মালিক জেসমিন নাহার হ্যাপী বৈবাহিক কারণে কুড়িগ্রামের খান পাড়া এলাকায় থাকায় তার স্বামী বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত আমির হোসেন লিপন ও শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের নানা কথার উদ্বেগ হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে ক্রয়কৃত জমি দখলে নেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। উক্ত জমিতে ২৩ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে হালচাষের পর জমিতে পানি নেয়ার উদ্দেশ্যে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোঃ হাবিবুর রহমান ও তার কন্যা জেসমিন নাহার হ্যাপী উপস্থিত হলে গুঞ্জাবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র জমিদাতা ১) শহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী ২) মোছাঃ ফিরোজা বেগম, পুত্র ৩) ফখরুল ইসলাম, কন্যা ৪) মোছাঃ সুখী বেগম, পুত্র ৫) বাবু মিয়া অতর্কিত জমিতে পানি নেয়া বন্ধ করে দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মতে বোতলে করে নিয়ে আসা এসিড দ্রুত অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোঃ হাবিবুর রহমানের শরীরে ছুঁড়ে মারে। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট হাবিবুর রহমানের কন্যা জেসমিন নাহার হ্যাপী তার পিতাকে রক্ষা করতে এসে নিজেও এসিড হামলার শিকার হন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় দ্রুত পিতা ও কন্যাকে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে নাগেশ্বরী থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শফিউল আলম শফি জানায়, অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট হাবিবুর রহমান তার মেয়েকে শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শহিদুল ও তার পরিবারের লোকজন জমির দখল বুঝে দিচ্ছে না। এ ঘটনায় ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগও দেয়া হয়েছিল। আমরা শালিস বৈঠক করলেও শহিদুল কোন কিছুই তোয়াক্কা করে না। এটুকুই আমি জানি। কিন্তু আজকের এসিড হামলার ঘটনাটি আমার জানা নেই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন