নুর-ই আলম সিদ্দিক, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
সরকারি নিয়ম সকাল ৯টা হলেও নাগেশ্বরী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী আসলেন বিকেল ৫টায়। এটা নাকি তাদের রম্নটিন করা। জানা গেছে অনিয়মের ধুলা অন্যদের চোখে দিতে তাদের এ কৌশল। তবে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। আর একসঙ্গে আসা ক্রেডিট সুপার ভাইজার বলেছেন স্যারকে (ওই অফিসের কর্মকর্তা) আনতে দিন চলে গেছে। আর এক অফিস সহকারীর দাবি তিনি মাঝে-মাঝে এসে ছিলেন।
জানা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের অধীন মহিলাদের জন্য আয় বর্ধক (আইজিএ) প্রকল্পে নারীদের কর্মমূখী প্রশিÿণ চলছে। এসব প্রশিÿণের প্রশিÿণার্থী বাছাইয়ে টাকা নিয়ে তালিকা করাসহ প্রশিÿণ সরঞ্জাম না কিনে নামমাত্র প্রশিÿণ প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগি চলছে। এমন অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা তথ্য নিতে বেলা ১২টার দিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে সেখানে একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছাড়া কাউকে পাওয়া না গেলে পাশে প্রশিÿণ কেন্দ্রে যান তারা। সেখানে তথ্য ও ছবিসংগ্রহ শেষে দুপুর দুই টার দিকে আবার অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিস খোলা থাকলেও কেউই নেই। পরে বিকেল পর্যন্ত্ম অপেÿা করেন সংবাদকর্মীরা।
এদিকে বিকেল পাঁচটার পরে একটি সাদা মিনি মাইক্রো গাড়ীতে করে উপজেল নির্বাহী কার্যালয়ে আসেন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেবুননেছা ও ক্রেডিট সুপার ভাইজার নিহার রঞ্জন বর্মন। গাড়ী থেকে নামার পর কথা হয় ক্রেডিট সুপার ভাইজার নিহার রঞ্জন বর্মনের সাথে। কয়টা বাজে? জানতে চাইলে নিহাররঞ্জন বলেন, সারা দিন স্যারের সাথে ওনাকে আনতে দিন শ্যাষ। ওনার অনেক কাজ করে দিয়ে নিয়ে এলাম। কি করবেন, বলেন!
এ নিয়ে কথা হয় উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেবুননেছার সাথে। সাংবদিক পরিচয় দিয়ে ওনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কেন! অফিস যাবো কেন? অফিসে তো আমার কোন কাজ নেই।
আপনিসহ আপনার অন্যান্য লোকজন বিকেল পাঁচটায় এলেন। সারাদিন কেউ ছিলোনা। এ কথায় কোন কথা বলতে চাননি তিনি। পরে তার দপ্তরের প্রশিÿনের তথ্য চাইলেও তিনি কোন কথা বলেননি। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এ নিয়ে বক্তব্য দেয়ার কিছু নেই। পরে উপজেলা নির্বাহীর কার্যালয়ে যান তারা। সে সময় অফিস সহকারী শাহিন মাহমুদ আসেন। তিনিও অফিসে নাই জানতে চাইলে বলেন, আরে না। মাঝে-মধ্যে ছিলাম। আপনাদের দেখেছি। আপনি দেখনেনি।
একটি সূত্র জানিয়েছে ওই অফিসের আওতায় চলা প্রশিÿণ গুলোর অনিয়ম নিয়ে অন্যদের চোখে ধুলো দিতে বেশির ভাগ সময় রাতে অফিস করেন তারা। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেবুননেছা জেলা কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি মাঝে মাঝে আসেন। অফিসের ক্রেডিট সুপার ভাইজার নিহার রঞ্জন বর্মন ও অফিস সহকারী শাহিন মাহমুদও সন্ধ্যায় কাজ করেন। এর মাঝে নাগেশ্বরী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বেশ কিছু অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা জাহান বলেন, ওনারা সন্ধ্যায় আমার এখানে এসেছিল। কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলোর জন্য। ৯টার অফিস ৫টায় এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি জানলাম তাদের বলে দেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন