দেলোয়ার হোসেন,নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে মুরসালিন হোসেন নামে তিনমাস বয়সী এক শিশু সন্তানকে আছার মেরে হত্যার দায় থেকে বেঁচে গেলেন ইয়াসিন আলী নামে এক পাষন্ড বাবা। বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার নারায়নপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
সদর থানার উপ পরিদর্শক জামান উদ্দিন স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, তিন মাসের শিশু মুরসালিনকে বাড়িতে বিছানায় রেখে তার মা রুপা বেগম পাশের বাড়িতে পানি আনতে যায়। এসময় শিশু বাচ্চাটি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে রেগে গিয়ে বাবা ইয়াছিন আলী বাচ্চাটিকে ঘরের ইটের দেয়ালে আছার দেয়। বাড়িতে এসে রুপা দেখেন তার সন্তান অচেতন হয়ে পড়ে আছে। পাশেই শিশুটির বাবাকেও বসে থাকতে দেখে। এসময় শিশুটির মাথা ও নাখ-মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে তিনি শিশুটিকে দ্রুত পাশের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মাথায় পানি দেয়। পরে শিশু মুরসালিনকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়ি থেকে ইয়াসিন আলীকে আটক করে।
কাফুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য বিকেলে তাকে ফোন দিয়ে জানায় এক বাবা তার শিশু সন্তানকে আছড়ে মেরে ফেলেছে। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেক মানুষের ভীর দেখতে পান। মানুষ ক্ষিপ্ত হওয়াতে আরেকটি দুর্ঘটনার শঙ্কায় শিশুর বাবাটিকে ঘরে মধ্যে আটকে রাখা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে অস্বীকার করে। পরে শিশুটির মাথায় কয়েক জায়গায় বড় বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবে পড়ে গেলে হওয়ার কথা না। এমন কথা বলে তিনি ইয়াসিনকে বলেন, তুমিতো বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছো, পরে যাই হোক ইয়াসিন তার বাচ্চাকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এদিকে ইয়াসিন আলীকে আটকের পর শিশুটির মা রুপা বেগমসহ তাদের স্বজনরা থানায় স্বশরীরে এসে মামলা করতে অস্বকৃতি জানান। সেই সাথে ইয়াসিন আলীর হাত থেকে পড়ে গিয়ে শিশু মুরসালিনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দেন। পরিবারের কেউ মামলা না করায় পুলিশ অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সেই সাথে শিশুটির বাবা ইয়াসিনকে তার স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *