ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী কেন্দ্র সচিবের অবহেলায় গতকাল নির্ধারিত ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষা দিতে পারেনি। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে কেন্দ্রের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেন্দ্র সচিব নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেনকে তলব করে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কমার্সের মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার ( রোল নং ৫০৫৯৫৯) গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে তাকে কুলাউড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে ইনজেকশন দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন। এতে ২৫ মিনিট সময় বিলম্বিত হয়। ২৫ মিনিট পর শিক্ষার্থী কেন্দ্রে উপস্থিত হলে হল পরিদর্শক তাকে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এর প্রশ্নপত্র দেন। হল পরিদর্শক কেন্দ্র সচিবের কাছে উত্তরপত্র আনতে গেলে কেন্দ্র সচিব ২৫ মিনিট দেরীর অজুহাতে উত্তরপত্র দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তখন মেয়েটি পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে কান্নাকাটি করলেও সচিবের মন গলেনি। উপরন্তু মেয়েটিকে ধমক দেন কেন্দ্র সচিব আমীর হোসেন। শিক্ষার্থীর মা খন্দকার হোসনে আরা অভিযোগ করে বলেন , ‘মেয়েলী জনিত কারনে বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ হলে প্রথমে সে কয়েকবার বমি করায় আমরা ঘাবড়ে যাই। হাসপাতাল বাসার নিকটবর্তী হওয়ায় চিকিসার জন্য নিয়ে গেলে ডাক্তাররা বড় ধরনের কোন সমস্যা নয় বললে আমরা ২৫ মিনিট বিলম্বে পৌছাতে সক্ষম হই। কিন্তু আমার মেয়ে বালিকা স্কুলের শিক্ষার্থী হওয়ার প্রতিহিংসা বশত: নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আমার মেয়েকে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছেন। আমার মেয়ে এখন মানসিকভাবে ভেংগে পড়েছে। সে কান্নাকাটি করছে। আমরা বোর্ডের কাছে ন্যায় বিচার চাই। এব্যাপারে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমার বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ২৫ মিনিট দেরীতে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া সত্বেও পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার সুযোগ না দেওয়ার বিয়টি দু:খজনক। কেন্দ্র সচিব বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত না করে নিজে একগুয়েমী করে সিদ্বান্ত দেওয়ায় একটি মেধাবী শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত অনিশ্চিতের মূখে ঠেলে দেওয়া হলো। এব্যাপারে কেন্দ্র সচিব আমির হোসেন বলেন, ২৫ মিনিট ৫০ মিনিট দেরীতে শিক্ষার্থী কেন্দ্রে আসলে অবজেক্টটিব পরীক্ষার নির্ধারিত ২৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হওয়ার ফলে আমি আর তার পরীক্ষা নিতে পারেনি। এরপরেও সিলেট বোর্ডে যোগযোগ করলে তাদের অনুমতি না পাওয়ায় তার পরীক্ষা নেইনি। কেন্দ্রের সভাপতি ইউএনও’র বিষয়ে তিনি বলেন,উনি উনার অবস্থান থেকে বলেছেন,আমিতো বোর্ডের সিদ্বান্তের বাহিরে যেতে পারিনা। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো:গোলাম রাব্বি জানান, পরীক্ষার্থীর অসুস্থতা জনিত কারনে কেন্দ্রে সামান্য দেরীতে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখা উচিত ছিল। আমাকে প্রথমে জানানো হয়নি। পরে জেনে আমি কেন্দ্র সচিবকে তলব করে ব্যাখ্যা চেয়েছি।