মো নাজমুল হুদা মানিক।।
গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ, উস্তি, লংগাইর,মশাখালি, পাইথল, নিগুয়ারি, টাঙ্গাব ও দত্তের বাজার এই ৮ টি ইউনিয়নকে নিয়ে গঠিত পাগলা থানা কে পাগলা উপজেলা করার দাবিতে ১৬ নভেম্বর বিকাল তিনটায় সাহেব আলী একাডেমি মাঠে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আলাউদ্দীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুজ্জামান খান, সাবেক চেয়ারম্যান হালিম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন খান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আসাদুজ্জামান সরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য আবুল কাশেম, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ফারুক হোসেন মন্ডল, গফরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শাহজালাল সাজু, নজরুল ইসলাম, তানসেন মাস্টার, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বাবুল, যুবলীগ নেতা শাহজাহান, শাহীন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল মাজহার। পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা ও এলাকাবাসীর দাবির পরিপাক্ষিতে পাগলা প্রশাসনিক থানাকে পাগলা উপজেলা হিসাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন,নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধীবেশনে পাগলা থানাকে উপজেলা হিসাবে ঘোষণা না দিলে পর্যায়ক্রমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
জনসভাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবি, সমাজসেবি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ হাজারো জনতা উপস্থিত ছিলেন। পাগলা থানা এলাকাবাসী জানান, পাগলা সদর থেকে গফরগাও সদরের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার হলেও টাঙ্গাবর কালি বানার নদীরপার হতে ৩৫ কিলোমিটার এর ঊর্ধ্বে। নিগুয়ারি ত্রিমুহনী হতে গফরগাঁয়ের দূরত্ব একই অবস্থা। দাপ্তরিক কাজের জন্য তাদেরকে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে গফরগাঁও উপজেলা সদরে গিয়ে দৈনন্দিন কাজ করতে হয়। এতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ এবং ভোগান্তিতে পড়ে। দীর্ঘ ১২ বছর পূর্বে ৩১ মার্চ ২০১১ ইং তারিখে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গফরগাঁও উপজেলায় রিকশাচালক হাসমত আলীর প্রতি বিরল ভালবাসার প্রদর্শন হিসেবে তার বাড়ি উদ্বোধন করার জন্য গফরগাঁও এসেছিলেন। পরে গফরগাঁও কলেজ মাঠের বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী পাগলা তদন্ত কেন্দ্রকে পাগলা প্রশাসনিক থানা হিসেবে ঘোষণা করেন। ২৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ অধিদপ্তর শাখা প্রশাসনিক থানা হিসেবে ১৫ এপ্রিল ২০১২ ইং গেজেটের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপনে আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেন। দত্তের বাজার, টাঙ্গাব, নিগুয়ারি, পাইথল, মশাখালি, লংগাইর, উস্তি ও পাঁচবাগ ইউনিয়ন নিয়ে পাগলা প্রশাসনিক থানা গঠিত হয়। ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত পাগলা থানার প্রায় ২৩ লাখ জনগণের দাবি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার সংসদের প্রথম অধিবেশনে পাগলা থানাকে প্রশাসনিক উপজেলায় উন্নীত করতে হবে। জনসংখ্যা অধ্যুষিত হলেও পাগলা এলাকার মানুষের যাতায়াত সহ সার্বিক সুবিধা হতে এলাকাবাসী অনেক বঞ্চিত। সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোকে কষ্ট করে অনেক দূর গফরগাঁও উপজেলা সদরে যেতে হয় প্রয়োজনীয় কাজ করার জন্য। এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে তাদের অনেকদিনের পুরনো দাবি পাগলা উপজেলা বাস্তবায়নে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তাদের মুখে এখন স্লোগান একটাই, পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন চাই। পাগলা থানার সাথে একই সময়ে গঠিত তদন্তকেন্দ্র ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানা, কক্সবাজারের পেকুয়া, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও বরগুনার উপজেলায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু পাগলা প্রশাসনিক থানা উপজেলায় উন্নীত হয় নাই। জনশ্রুতি রয়েছে অলিকুলদের শিরোমনি হিসেবে পরিচিত একজন পাগলা বাবার নামে এই এলাকার নামকরণ হয়েছে পাগলা । বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফরিদুজ্জামান খান বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩৪ নং আসামি ব্রিগেডিয়ার ডাক্তার খোরশেদ আলম, যিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে জেল খেটেছেন তার বাড়ি পাগলা থানার টাঙ্গাব ইউনিয়নে। ১৯৭০ সানে নির্বাচিত প্রফেসর শামসুল হুদার বাড়ি পাইথাল ইউনিয়নে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ও আওয়ামী লীগের সংখ্যা পাগলা থানায় অনেক বেশি। ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মোঃ ফারুক হোসেন মন্ডল বলেন, পাগলা থানার কৃতি সন্তান ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের সার্বিক নির্দেশনায় ও পাগলা উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. আলাউদ্দীনের নেতৃত্বে এলাকার হাজার হাজার মানুষ পাগলা প্রশাসনিক থানাকে পাগলা উপজেলা হিসাবে রূপান্তরিত করার জন্য সোচ্চার হয়ে উঠেছে। পাগলা থানায় বহুতল থানা ভবন, দুটি সাব রেজিস্ট্রার অফিস, তিনটি কলেজ, একটি কামিল মাদ্রাসা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। শুধুমাত্র উপজেলা ভুবন নির্মাণ করলেই পাগলা প্রশাসনিক থানা কে উপজেলায় উন্নীত করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *