জুড়ী (মৌলভীবাজার)সংবাদদাতা
বন বিভাগের মামলায় দীর্ঘদিন জেল খাটার পর জামিনের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে নিজের এক মাত্র বসতভিটা বিক্রি করেন তশিদ আলী। এরপর অসহায় হয়ে পড়েন তিনি।বৃদ্ধ মা এবং বাচ্চাদের নিয়ে থাকার কোন জায়গা না থাকায় বিট কর্মকর্তার মানবিক দৃষ্টিতে সরকারি জায়গা দেখা শোনার শর্তে বন বিভাগের জায়গায় ছোট্র মাটির ঘরে করে দেন প্রায় ২০বছর আগে। এর পর থেকে সেখানেই বসবাস করছিলেন মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের ১৭ নং এলাকার মৃত উমর আলীর ছেলে তশিদ মিয়া। ৬ মেয়ে, ২ ছেলে এবং বয়স্ক বৃদ্ধ মাকে নিয়ে চলছিল তার সংসার। সরকারি এই জায়গার প্রতি নজর আসে স্থানীয় প্রভাবশালিদের। তারা সেটা দখল করতে গিয়ে বাড়ির পাশে লাগানো পান গাছ, সুপারী গাছ, আনারস গাছ সব কেটে চুরমার করে দিয়েছেন ফুলতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত ফয়াজ আলীর ছেলে দুলাল মিয়া, আবুল মিয়া, বাবুল আহমদ গংরা।দেশীয় অস্থ নিয়ে ভিটে মাটি ছাড়ার হুমকি দেয়া হয়েছে অসহায় এই পরিবারের সদস্যদের।নিরুপায় হয়ে প্রাণে বাচাঁর শর্তে স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেওয়া হয় জোর করে।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার না পেয়ে অসহায় এই পরিবার এখন দিশেহারা।

গতকাল এই প্রতিবেদক সরেজমিনে সেখানে গেলে,পরিবারের কর্তা তশিদ মিয়া তার স্র সহ ৮ টি বাচ্চা নিয়ে হাউমাউ করে কাদঁতে থাকেন।জীবনের চেয়ে তো গাছ বড় নয়,দস্তখত বড় নয় এমন আক্ষেপ করে তারা বলেন,গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মৃত ফয়াজ আলীর ছেলে দুলাল, আবুল ও তাদের সঙ্গী সহ ১৫-২০ জন এসে জায়গা দখল করে বসে।তারা এ জায়গা দখল করে খাসিয়াদের দিলে ৩০ লক্ষ টাকা পাবে।বিট কর্মকর্তার নির্দেশে তারা আবার দখল করা ঘর আজ মঙ্গলবার(৪ আগষ্ট) সব ভেঙ্গে নিয়ে যায়। আমার লাগানো পান গাছ, আনারস গাছ সবকিছু কেটে আমাকে ১০ দিনের ভেতরে উটে যাওয়ার হুমকি দিয়ে চলে গেছে। যদি না যাই তাহলে সবার লাশ বাথরুমে ফেলে দেবে বলে গেছে। এখন আমরা কি করবো এই চিন্তায় আছি। স্থানীয় বন বিট অফিস সূত্রে জানা যায়, এই জায়গাগুলো বন বিভাগের সম্পদ। পাহাড় অঞ্চলে সরকারের রক্ষিত গাছ রয়েছে। তশিদ আলী নামের একজন লোক অনেক দিন থেকে অবৈধভাবে সেখানে বসবাস করে আসছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দুলাল আহমদ বলেন, এগুলো আমাদের জায়গা। আমাদের কাগজ আছে, আমার বাবা ফয়াজ আলী তশিদ আলী কে পাহারাদার হিসেবে কাজ করে। ।সে কিভাবে জায়গার মালিক হবে। বন বিভাগের লোকজন আমাদের কেন উচ্ছেদের জন্য আসলেন সেটা আমার বোধগম্য নয়।
বন বিট সাগরনাল -ফুলতলার কর্মকর্তা মো হাফিজুর রহমান বলেন,এগুলো বিটের জায়গা।দুলাল সহ কয়েকজন সেই জায়গা দখল করার খবর পাওয়ার পর আমরা রেঞ্জ কর্মকর্তা স্যার সহ সবাই অভিযান করে জায়গাগুলো উদ্ধার করেছি। যারা দখল করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে।
জুড়ী রেঞ্জ অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, দুলাল গংরা জায়গা দখল করেছে খবর পেয়ে আমরা গিয়ে জায়গা গুলে উদ্ধার করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন