রতি কান্ত রায়, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তে ঘেঁষা দৃষ্টিনন্দন বিশাল আকৃতির শিমুল গাছটি এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে ঠিকে আছে। বর্তমানে বসন্তে শিমুল গাছটিতে ফুল ফুটে অপরুপ সাজে সেজেছে । ফুলের গন্ধে ভিড় করছে নানা ধরনের পাখ-পাখালী। মৌমাছির গুঞ্জরণ আর বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলরবে মুখরিত শিমুল তলা।
বিশাল আকৃতির গাছের ফুটন্ত শিমুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। প্রায় ৮ শতাশং জমির উপর দাড়িয়ে থাকা আনুমানিক ১৫০ ফুট লম্বা শিমুল গাছটির গোড়ার পরিধি ৫৮ হাত। বিশাল গাছের গোড়ায় দাঁড়ালে মনে হবে পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে আছি। দূর থেকে তাকলেই মনে হবে অপরুপ কারুকার্য করা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে । স্নৃতিসৌদ্ধ আকৃতির গাছটি নিয়ে প্রচলিত আছে নানান লোককাহিনি।
এত বছরে গাছটির যৌবনে এখনও ভাটা পড়েনি। রাশি রাশি ফুটন্ত ফুলের অপরুপ সৌন্দর্য মোহিত করছে চারিদিক। চিরযৌবনা গাছটির সঠিক বয়স অনুমান করতে পারনি কেউ ।
তরুন,যুবক,বৃদ্ধ সকলেই জন্ম থেকে গাছটিকে একই রুপে দেখে আছছেন। কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ খোকা চন্দ্র বর্মণের কাছে শোনা যায়, খোকা চন্দ্রের দাদা তার দাদার কাছে শুনেছেন,গাছটি বতর্মান সময়ে যেমন আছে সেই সময়েও ঠিক তেমনি ছিল।
কেউ কেউ অনুমান করেছেন গাছটির বর্তমান বয়স ৫০০ বছরের মত হবে। দিনে দিনে গাছটি আরও যৌবনবতি হচ্ছে। বসন্ত আসলেই মৌমাছির চাকসহ ভিড় করে নানান প্রজাতির পাখি।
বিশেষ করে টিঁয়া পাখির অভায়াশ্রম গাছটি। বিকাল হলেই অসংখ্য টিঁয়া পাখি সহ নানা প্রজাতির পাখির কলরব মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের । লোককাহিনি আছে যে, এ গাছের নীচে বাস করে নাগ -নাগিনী। লুকায়িত আছে তাদের রাশি রাশি মূল্যবান গুপ্তধন। শোনা যায়,নারিয়া মামুদ নামে এক ব্যক্তি গুপ্তধন তুলতে গিয়ে অন্ধ হয়েছেন। নাগ-নাগিনীর অভিশাপের ভয়ে এতদিনেও কেউ গাছটি কাটার সাহস করেননি।
দীর্ঘদিন ধরেই এখানে নাগ-নাগিনী বাস করছে।লোকে বলে নাগ-নাগিনীর বাসস্থানের কারনেই এত বছরে গাছটিতে বয়সের ছাপ পড়েনি।
বসন্তে ফুল ফুটলে মনে হবে এটি চির যৌবনা।অসংখ্য ফুটন্তফুলে চারিদিকে অপরুপ শোভা ছড়িয়ে আছে। সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনেই আসছে নানান বয়সের দর্শনার্থী। তবে গাছটির কাছে যেতে তাদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে । সরু রাস্তার কারণে মোটরবাইক বা সাইকেলে যাওয়া কষ্টকর। গাছটির চারিদিকে বসতবাড়ি গড়ে উঠায় এর সৌন্দর্য্য অনেকটা ঢাকা পড়েছে। গাছটি রক্ষা ও গাছের কাছে যাওয়ার রাস্তাটি সংস্কারের দাবী দর্শনার্থীদের।