নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজশাহী উন্নয়ন কতৃপক্ষে (আরডিএ) মাস্টার রোলে (অস্থায়ী নিয়োগ) কর্মরত ৪০ জন কর্মচারী কাজ না করেই মাসের পর মাস বেতন উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে তাঁদের কারো নিয়োগ পত্র না থাকলেও বেতন ভাতা তাঁরা প্রতিমাসেই উত্তোলন করেন। এসব অনিয়মে জড়িত আছেন উদ্ধর্তন কয়েকজন। ওই টাকার ভাগও পায় তাঁরা।
অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে (মাস্টার রোলে) চেয়ারম্যান দপ্তরে ১ জন, প্রশাসনে ২৮ জন, হিসাব শাখায় ৩ জন, পরিকল্পনা শাখায় ২ জন, এস্টেট শাখায় ৩ জন, প্রকৌশল শাখায় ২ জন ও অথরাইজড শাখায় ১ জন কর্মরত আছেন।
যদিও তাদের মৌখিক নিয়োগ শর্তে নো ওয়ার্ক নো পে বলা আছে, তবুও তাঁরা মাসিক বেতন পান ১৫ হাজার টাকা। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সুত্র বলছে, ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি মাধ্যমে রাজশাহী উন্নয়ন কতৃপক্ষ কর্মচারী ইউনিয়ন লীগের নামে একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দাবিদার জালাল উদ্দীন এসবের মুলহোতা। সুসংগঠিতভাবে জালাল উদ্দীনের নেতৃত্বে কোন কাজ না করেই অফিসে বসেই বেতন নেন তারা। অফিসাররাও ভয় করেন তাদের। এ সুযোগে জালাল গং অফিসারদের ব্লাক মেইলসহ নানা অনিয়মের কাজে প্রভাবিত করেন। অস্থায়ী নিয়োগ প্রাপ্তদের একত্র করে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণে বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকেও হয়রানি করেন তিনি।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অস্থায়ী নিয়োগ হলেও জালাল উদ্দীন ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে দীর্ঘ ১৬ বছর চাকুরী জীবনে। ইতোমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অগনিত অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগী অনেকেই।
ট্রেড ইউনিয়ন আইন বলছে, স্থায়ী অস্থায়ী যে কোনো কর্মচারী ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারেন। তবে অস্থায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত কেউ ইউনিয়নের পদে থাকতে পারবে না। তবুও কিভাবে জালাল উদ্দীন আরডিএ’র শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন লীগের সভাপতি ও রাজশাহী মহানগর শ্রমিক লীগের সহ সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত আছেন তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
নাম না প্রকাশ করা শর্তে একজন ভুক্তভোগী বলেন, আরডিএ’তে একটি কাজে গিয়েছিলাম। সেখানে কাজটি করার শর্তে সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীনকে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাজটি তিনি করে দেননি এমনি টাকাও ফেরত দেয়নি। এরকম অনেক ভুক্তভোগীর নিকট থেকে বিভিন্ন কাজ করে দেওয়া শর্তে টাকা নেন তিনি।
এসব বিষয়ে কথা বললে রাজশাহী উন্নয়ন কতৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো: রহমতুল্লাহ বলেন, কোনো সংবাদে বক্তব্য দেওয়া আমার চেয়ারম্যানের নিষেধ আছে। তিনি এসব বিষয়ে বক্তব্য দিবেন। তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন তথ্য দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে ও তথ্য চাইলে এস্টেট অফিসার বদরুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। আমি এসব বিষয়ে কথা বলতে পারি না, চেয়ারম্যানের নিষেধ আছে।
রাজশাহী উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিয়াউল হককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে আরডিএ’র কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও অস্থায়ী কর্মচারী জালাল উদ্দীন বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। দীর্ঘ ১৬ বছর চাকুরী করি আরডিএতে। ১৫ হাজার টাকা বেতন পাই তা নিয়েই চলি। এছাড়াও আমরা রাজশাহী স্থানীয় মানুষ, আমাদের পরিচিত অনেক, আমি রাজশাহী মহানগর শ্রমিকলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক পদে আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *