কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
বিদ্যালয়ের ৫ লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের কাঠাল, মেহগুনী শিশবসহ অন্যান্য গাছ কেটে ভাগবাটোয়ারা করে নিলেন প্রধান শিক্ষক, নৈশ্য প্রহরী ও বিদ্যালয় পরিচালনা পরষদের সদস্যরা আর পুরাতন ৪ কক্ষ বিশিষ্ট্য টিন সেডের ইট খুলে নিয়ে গেলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার্র নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী ।
ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের শরিয়ত উল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টির নুতুন ভবনের কাজের টেন্ডার হলে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অর্ধশতাধিক বছরের বিশাল আকৃতির কাঠাল, মেহগুনী শিশবসহ ১৫ টি গাছ কেটে ফেলে। পুরাতন ভবনের ইট, টিন, রড এবং গাছ বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নেন প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, পরিচালনা পরষদের সদস্য ও সাবেক সভাপতি উমর আলী নৈশ্য প্রহরী কুতুব উদ্দিন ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, বিদ্যালয়টির নুতুন ভবন নিমার্ণের কারনে ৪কক্ষ পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভবনের ইট, টিন, লোহার পাত কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এলাকাবাসী জানান, পঁাচ ট্রলি ইট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি জালাল মন্ডল ভুরুঙ্গামারী সদরে তার বাসায় নিয়ে যান। বাকি ইট বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ নৈশ্য প্রহরী ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। টিন এবং লোহার পাতের কোন হদিস মেলেনি। এদিকে ওসুধ কম্পানির পকেট প্যাডের ছোট কাগজে স্বাক্ষর এবং সীলমহর দিয়ে একটি মরা গাছসহ কয়েকটি গছ কাটার অনুমতি দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। এই অনুমতির বলে বিদ্যালয়ের পুরাতন গাছ কেটে বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নেন প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পরষদের সদস্যগণ।
একাধিক এলাকাবসী জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসব কর্মকান্ড করা হয়েছে। যে গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে তার বাজার মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। আর পুরাতন ভবনের ইট রটের মূল্যমান ৩লাখ টাকার মতো। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের যোগসাজসে রাতের অন্ধকারে বিক্রি ও ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে। প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান জালাল মন্ডলের নির্দেশে করা হয়েছে। এসবকিছু ব্যাপারে উনিই ভালো বলতে পারবেন। বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান এ্যডহক কমিটির সদস্য উমর আলী জানান, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক কর্মকতার্ প্রথমে আমাকে ঘর ভাংগার দ্বায়িত্ব দিয়েছেলো পরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন। ঘর ভাংগা গাছ কাটা এবং এসব বিক্রি করার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। তবে গাছ বিক্রি হয়েছে বলে শুনেছি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি জালাল মন্ডল জানান, নুতুন ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। বিক্রি করা হয়নাই বিভিন্ন করাতকলে রাখা হয়েছে। ইট নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন ট্রাকে করে ইট নিয়ে এসেছি কতগুলো হবে তা হিসাব করে দেখা হয় নাই। গাছ কাটার অনুমতি আপনি দিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি কোন মন্তব্য করেন নাই। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতার্ জোত্যির্ময় বর্মণ জানান, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গাছ কাটার লিখিত কিংবা মৌখিক অনুমতি কেউ নেননি বা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আমরা জেনেছি তদন্ত্য করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্ববাহি কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রেসিভ করেন নি।