বেনাপোল সংবাদদাতা ঃ-বেনাপোল স্থল বন্দর এলাকায় ট্রান্সপোর্ট ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘ দিন যাবৎ একটি চাঁদাবাজ মাফিয়া সিন্ডিকেট সক্রিয় থেকে প্রতিমাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা অবৈধ ভাবে লুটে নিচ্ছে। এই চক্রটি বিগত দুই বছর যাবৎ স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি চক্রটি জনসেবার নামে স্বল্প মুল্যে সরকারী সম্পত্তি নিজ নামে গ্রহনকারী ওই শীর্ষ জনপ্রতিনিধির ব্যক্তিগত সম্পতিটাকেও তারা এই অবৈধ চাঁদা বাজির আখড়া হিসেবে ব্যবহার করছে। চক্রটির পালের গোদা হিসাবে যার নাম উঠে আসছে তিনি হলেন ছদ্ব বেশি রাজনীতির আজিম উদ্দিন গাজি।
এই চক্রটি হোতা আজিম উদ্দিন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জায়গাটি আখড়া হিসেবে অবৈধ ভাবে প্রত্যেকদিন প্রায় ২ শত রফতানি পন্য বাহি ও খালি ট্রাক অবস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করছে। আবার যদি কোন ট্রাক একদিনের বেশী অবস্থান করে তাহলে সময় বুঝে ট্রাক প্রতি ১০০ টাকার অনেক বেশী আদায় করা হয়। এভাবে এই জায়গা থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা অবৈধ চাঁদা আদায় হয়। অন্যদিকে দিঘির পাড় থেকে প্রবেশ করা বাইপাশ সড়কটির ট্রাক টার্মিনালটির দক্ষিণ পশ্চিম পাশে ভারতীয় পাথরবাহী ট্রাকের কাছ থেকেও ট্রাক প্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকে । খোজ নিয়ে জানাগেছে এই এলাকায় প্রতিদিন যে সব ভারতীয় পণ্য বাহী ট্রাক চালক ও হেলপার বৃন্দ অবস্থান করেন তাদের কাছ থেকে ঐ এলাকার একটি পুকুরে তাদের স্নান করা বাবদ জনপ্রতি ৫০ টাকা করে অবৈধ ভাবে আদায় করা হয়। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো এই এলাকায় পাথর ভাংগার যে কাজ চলছে তা পুরোপুরি বন্দর এলাকার বাইরে অবস্থিত হওয়ায় পরিবেশ দূষন হচ্ছে। এমনকি ফসলি জমিও অবাধে নষ্ট করা হচ্ছে।
এদিকে তালশারী, দিঘিরপাড় ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় এই চাঁদাবাজ চক্রটির নিয়োজিত নাইটগার্ড বাহিনীও নিয়মিত তাদের মত করে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। তারাও ট্রাক প্রতি নৈশ প্রহরা ও শৌচাগার নির্মানের নামে ১০০ টাকা করে আদায় করছে। এভাবে এই দুই জায়গা মিলে প্রতিদিন যা আয় হয় তার একটি গড় হিসাবে মাসিক কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির হিসাব পাওয়া যাচ্ছে। কথা হলো বন্দরের নিজস্ব পাহারাদার থাকা সত্বেও কেন এই ব্যক্তিগত প্রহরা বাহিনীর দরকার পড়ছে? আর এদিকটি বন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বৃন্দ নজর না দিয়ে কেন এড়িয়ে যাচ্ছেন ? তাছাড়া এ এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দও এই প্রহরী চাঁদাবাজদের দেখেও না দেখার ভান করছে। এরাই আবার পৌরসভা পরিচালিত বৈধ ট্রাক টার্মিনালের শৃঙ্খলারক্ষাকারী কর্মী বৃন্দকে হয়রানিও করছে। পরিবেশ দুষণ সম্পর্কে অত্র এলাকার অনেক বাসিন্দা সরেজমিন খোজ খবর নেওয়ার সময় এই প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ কিংবা পোর্টথানাপুলিশ এ অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এদিকে তালশারী এলাকায় এই চাঁদাবাজি চালানোর জন্যে একটি অবৈধ চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। সেখানে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে তাতে লেখা হয়েছে ঝিকরগাছা, শার্শা, বেনাপোল যৌথ ট্রাক মালিক সমিতি চেকপোষ্ট। যতদুর জানা গেছে বন্দর এলাকায় এরকম একটি চেকপোষ্ট বসানোর দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের দেয়নি। এসব চাঁদাবাজি অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে বেনাপোল স্থল বন্দর পরিচালক আব্দুল জলিল তার মোবাইল ফোনে জানান বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনখানের নিকট আলাপ করলে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন।