দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় দরবার শরিফে কথিত পীর ও তার গৃহ পরিচারিকা কে গুলি করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় অবশেষে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের। জড়িত সন্দেহে কুড়িগ্রাম জেলার
ভুরুঙ্গামারী ও বোচাগঞ্জ থেকে পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। হত্যা কান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং পুলিশের কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট-এর একটি দল জঙ্গীবাদ সহ খুাঁটি নাটি বিষয় খতিয়ে দেখছেন। গত ১৩ মার্চ সোমবার রাতে উপজেলা দৌলাগ্রামে ২০১০ইং সালে স্থাপিত কাদরিয়া মোহাম্মদী দরবার শরিফে
দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা কান্ডের শিকার
হন দিনাজপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি কথিত পীর দৌলা গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র মোঃ ফরহাদ হোসেন চৌধুরী (৬২) এবং তার গৃহ পরিচারিকা পার্শ্ববর্তী মূলদুয়ার গ্রামে পাবনা পাড়ায় হাসের
আলীর কন্যা রুপালী বেগম (১৯)। এদিকে এই নৃশংশ চাঞ্চল্যকর হত্যা কান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুদ্দমারী উপজেলার পাথর ডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথর ডুবি গ্রামের মৃত পীর আজিমউদ্দীন পুত্র মোঃ ইসাহাক আলী শেখ পীর কে গ্রেফতার করে। এছাড়া স্থানীয় থানা পুলিশ উপজেলার মূলদুয়ার মৌজার পাবনা পাড়ায় সকমান ফকিরের পুত্র সাবেক মুরিদ সমের আলী (৫৫) এবং মনিপুর মৌজার মোঃ ফয়জুল হক ঘটুলুর পুত্র উক্ত দরবারে খাদেম মোঃ সাইদুর রহমান (৫২) কে আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি শ্রী তাপস চন্দ্র পন্ডিত জানায়, আটক কথিত পীর ইসাহাক আলীকে কুড়িগ্রাম কোর্টে সোর্পদ করা হয়েছে। এই হত্যা কান্ডের পর থেকে পুলিশ দৌলা গ্রামের আজিম উদ্দীনের পুত্র মোঃ শফিকুল ইসলাম বাবু (২৮) কে হন্যে হয়ে খুঁজছে। শফিকুলের অবস্থান জানাতে পুলিশ তার স্ত্রী নূর জাহান বেগমও তার মা মুসলিমা বেগম কে গত ১৪ মার্চ সকালে দিনাজপুরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অপর দিকে
পুলিশের কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট সহ সিআইডি, ডিবি,র্যাব সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই হত্যা
কান্ডের তদন্ত কাজে সহায়তা ও ক্লু উদ্ধারের
জন্য বিভিন্ন বিষয় তলিয়ে দেখছেন। এদিকে নিহত
পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরীর পুত্র আবু ফরহাদ
আশিকুর রহমান চৌধুরী আশিক জানান, পরিবারের পক্ষ
থেকে নিহতের একমাত্র কন্যা মোছাঃ ফাতিহা ফারহানা
(এমি) বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে বোচাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। বোচাগঞ্জ থানা ওসি আরজু মোহাম্মদ সাজাদ্দ হোসেন জানায়, প্রাথমিক অবস্থায় কুড়িগ্রাম ভুরুঙ্গামারী থানার গ্রেফতার হওয়া পীর মোঃ ইসাহাক আলী ও হত্যা কান্ডের শিকার কথিত পীর ফরহাদ হোসেন চৌধুরী মধ্যে পীরবাদ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের
বিষয়টি তদন্তে সর্বাধিক প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনার দিন ও ঘটনার পরদিন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের
অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও দিনাজপুর
পুলিশ সুপার হামিদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন
করেছেন। এহেন লোমহর্ষক হত্যা কান্ডের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন