লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।
নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রী আছিয়াকে ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষতস্থানে মরিচের গুড়া ও লবন লাগিয়ে দিয়েছে স্বামী আজিজুল ইসলাম। এযেন মধ্যযুগিয় ঘটনাকেও হার মানায়। নির্যাতিত আনিছা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এঘটনায় বুধবার (২২মে) দুপুরে আনিছার বাবা আমির হোসেন ৩জনকে আসামী করে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরআগে গত মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, এক যুগ আগে জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে আনিছা বেগমের সাথে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ২নং ফুলগাছ গ্রামের জাবুল ইসলামের ছেলে আজিজুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আনিছা বেগম ও আজিজুলের সংসার ভালই চলছিল। এর মধ্যে তাদের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। গত কয়েক বছর হয় আজিজুল নেশায় আসক্ত হয়ে স্ত্রী আনিছার সাথে ঝগড়া বিবাদ ও মার ডাং করতে থাকে। স্বামী আজিজুল ও শ্বশুর-শ্বাশুরী আনিছাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দেয়। পরে আনিছা বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা এনে দেন। এরপর আবার টাকার জন্য আনিছাকে চাপ দেয় আজিজুল। এবার আনিছা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৯টায় আবারও আজিজুল বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বললে আনিছা টাকা আনতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিজুল তার স্ত্রী আনিছাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কোপাতে থাকে। এতে আনিছা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরে তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির সহযোগিতায় ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে ক্ষতস্থানে মরিচের গুঁড়া ও লবন লাগিয়ে দেয় স্বামী। এসময় আনিছার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে নেশাখোর আজিজুল তাদেরকে ধারালো অস্ত্র উচিয়ে ভয় দেখায়। এসময় ভয়ে লোকজন কাছে যেতে পারেনি এবং আনিছাকে সাহায়্য করতেও পারেনি। পরে প্রতিবেশীরা দ্রুত আনিছার বাবার বাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে আনিছার বাবা মেয়ের বাড়িতে এসে গুরুতর আহত ও অচেতন অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে নির্যাতিত আনিছা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
আনিছার বাবা আমির হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়েকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় ঘরের বাহিরে ফেলে রাখে। পরে মেয়েকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আনিছার স্বামী ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে আসামী করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান।
এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার সরকার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর পরই ভিকটিমের অবস্থা জানার জন্য হাসপাতালে অফিসার পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।