স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভুরুঙ্গামারীতে জালিয়াতি করে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী সভাপতি ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রধান শিক্ষক সেজে একটি ভুয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নামে কাগজপত্র তৈরি করে শিক্ষক নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানাগেছে বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নাইটগার্ড আমিনুর রহমান ও ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মসজিদ ভিত্তিক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল আলম প্রধান শিক্ষক সেজে উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চর ধাউরারকুটি মৌজার ফোরকানীয়া মাদ্রাসার জমির কাগজ পত্র ব্যবহার করে সতিপুরী আহাম্মদীয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নাম দিয়ে কাগজপত্র তৈরি করে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছে। অভিযোগে প্রকাশ কথিত সভাপতি আমিনুর রহমান ও শামসুল আলম শিক্ষক নিয়োগের প্রলোভন দিয়ে কচাকাটা থানার পুর্ব খামার গ্রামের আফছার আলীর পুত্র আব্দুস ছালাম ও মকবুল হোসেনের পুত্র নজরুল ইসলামকে সহকারী মৌলভী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার শর্তে জন্য কয়েকদফায় প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০১৬ সালে নিয়োগের জন্য টাকা দিলে উক্ত প্রতারক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ২০০৫ সালের কাগজপত্র তৈরি করে তাদের নিয়োগপত্র প্রদান করে। এদিকে দীর্ঘ দিনেও মাদ্রাসার কোন নির্দিষ্ট ঘর ও কার্যক্রম না থাকায় তাদের সন্দেহ হলে উক্ত প্রতারক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের প্রতারনা প্রমানের জন্য তাদের নিয়োগপত্র নিয়ে ঢাকাস্থ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করলে ঐ মাদ্রাসার কোন নাম ও প্রতিষ্ঠানের কোড নম্বর না থাকায় তাদের সন্দেহ হয়। তারা দুজনে প্রতারক কথিত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে টাকা ফেরতের চাপ দিলে তারা টাকা দেয়ার আশ্বাস দিয়েও দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন তালবাহানা করে আসায় স্থানীয়দের তাদের প্রতারনার কথা ফাস করে দেয়। এদিকে উক্ত প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম ও সভাপতি আমিনুর রহমানের প্রতারনার দায়ে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা বিষয়টি সুরাহা করতে ইতিপুর্বে ৮০ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দিলেও তারা টাকা ফেরত দেয়নি। ফলে নিরুপায় হয়ে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কচাকাটা থানায় উক্ত ভুয়া মাদ্রাসার কথিত সভাপতি আমিনুর ও প্রধান শিক্ষক শামসুল আলমের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছে। এদিকে ভুয়া মাদ্রাসার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানাজানির পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সরেজমিন তদন্তে গেলে দেখা যায়,সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে আরও ৭/৮ জনের নিকট থেকে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়া সতিপুরী আহাম্মদীয়া স্বতন্ত্র মাদ্রাসা নামে কোন মাদ্রাসা নেই বলে এলাকাবাসী জানান। উক্ত মাদ্রাসার কমিটির আরেক সদস্য জনৈক মোসলেম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন খাতা কলমে সদস্য দেখালেও আমরা টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানিনা এবং আজ পর্যন্ত মাদ্রাসা ঘর উঠানো হয়নি। মাদ্রাসার সভাপতি বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরী করার সুবাদে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয় থেকে অনেক ছাত্র/ছাত্রীকে ঐ ভুয়া মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী দেখিয়ে প্রতিবছর পরীক্ষার্থীদের নিয়মিত অংশগ্রহন ও পাশের সনদ প্রদান করেছে। এ বিষয়ে কথিত মাদ্রাসার সভাপতি ও বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী আমিনুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক শামসুল আলমের নিকট জানতে চাইলে তারা জানান,চরধাউরার কুটি একটি ফোরকানীয়া মাদ্রাসা ইতিপুর্বে থাকলে বর্তমানে তার কোন অস্তিত্ব নেই আমি এবং শামসুল আলম মিলে ঐ মাদ্রাসার দলিল দিয়ে সতিপুরী আহাম্মদীয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নাম দিয়ে মাদ্রাসাটি চালু করার জন্য শিক্ষা অফিসে পরামর্শ নিয়ে মাদ্রাসাটি চালু করতে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সামান্য কিছু টাকা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উক্ত মাদ্রাসার বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শ্রী জ্যোতির্ময় সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান,উক্ত মাদ্রাসার বিষয়ে তার জানা নেই এটা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারের দায়িত্বে পরে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান,মাদ্রাসাগুলোতে আমরা শুধু বিনামুল্যে বই দিয়ে থাকি নিয়ন্ত্রন করার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরীর প্রতারনার বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শ্রী জ্যোতির্ময় সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি আরও জানান,কোন অভিযোগ পাইনি তবে প্রতারিতরা অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন