স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভূরুঙ্গামারীতে চাকুরীর আশায় বৃথা সময় ব্যয় না করে ধান ক্ষেতে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ১ সন্তানের জননী শাপলা বেগম নামের এক গৃহবধু।
উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের বেলদহ গ্রামের শাহজাহান আলীর কন্যা মোছাঃ শাপলা বেগম(২৩) স্থানীয় পাটেশ্বরী বরকতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণীতে পড়াশোনার সময় ২০১২ সালে পিতামাতা তাকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারিয়া গ্রামের জনৈক আল মামুন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর লেখাপড়া করে চাকুরী করে উপার্জন করার আশায় গুড়েবালি । তবুও পরের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেই উপার্জন করার জন্য তিনি তার স্বামীর সামান্য আবাদী জমিতে মৎস্য চাষ করার পরিকল্পনা নেন। তার স্বামীও তাকে এ কাজে সমর্থন করে। শুরু করেন আদর্শ মৎস্য খামার নামে ধান ক্ষেতে মাছ চাষ প্রকল্প। প্রথম বছরেই দ্বি-গুন লাভ হওয়ায় পরের বছর আরও অধিক জমিতে মৎস্য চাষ অব্যাহত রাখে এবং মৎস্য চাষের পাশাপাশি বাড়িতে দেশী বিদেশী জাতের গরু কিনে মোটাতাজাকরনের কাজও শুরু করে। মাছ চাষ করে আয়ের টাকা দিয়ে তার স্বামী আল মামুনের নামে পাথরডুবি ইউনিয়নের মইদাম মৌজার চাত্রা দোলা নামক স্থানে ৫৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে। । সেখানে দুটি টিনের ঘর নির্মাণ করে ঐ জমিতে মাছ চাষ করায় আজ তার সংসারে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। তার সাফল্যের গল্প আজ এলাকার মানুষের মুখে মুখে। গত ১৪ই আগষ্ট শাপলা বেগমের আদর্শ খামারে গিয়ে তার সাথে কথা বলে জানা যায়,কিভাবে সে সফলতার চাবি অর্জন করেছে। শাপলা বেগম জানান,বিয়ের পর তার স্বামীর সার্বিক সহযোগীতা ও তার ঐকান্তিক চেষ্টায় আবাদী জমিতে মাছ চাষ করে প্রতিবছর গড়ে ৩ লাখ টাকা উপার্জন করে থাকে। তিনি আরও জানান,সরকারী ও বেসরকারীভাবে খামারে সাহায্য,সহযোগীতা পেলে সে খামারগুলোর আরও সম্প্রসারন করে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। আর বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে,চাকুরীর পিছনে সময় নষ্ট না করে বিভিন্ন খামার সহ আত্মকর্মসংস্থান মুলক কাজে তারা নিয়োজিত হলে দেশে বেকারত্ম থাকবে না। নিজেকে নিজের কর্মসংস্থান করে আরও বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে তাদের কাজ করতে হবে। আজ বিভিন্ন এলাকার বেকার যুব মহিলারা তার নিকট পরামর্শ নিয়ে তারাও আবাদী জমিতে মৎস্য খামার করে সংসারের বাড়তি উপার্জন করছে। এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার ফারাজুল কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান,শাপলা বেগমের আবাদী জমিতে মৎস্য খামার এলাকার একটি মডেল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের আমিষের ঘাটতি পুরণে তার উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *