বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের সতিপুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের সোলার ও মটর পাম্প উদ্ধার করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয়রা। এদিকে প্রজেক্টর আত্মসাৎ করেছে বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন ২০১৭ সালের এপ্রিলে বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জিনিসপত্র নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। ২০১৭ সালের বেসরকারী সংস্থার প্রকল্প ওয়াশ ব্লক এর দেয়া মটর পাম্প, ২০১৭ -১৮ অর্থবছরের সরকারের দেয়া ৪০ ওয়াটের একটি সোলার নিজ বাড়িতে তিনি ব্যবহার করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং সহকারী শিক্ষদের অজান্তে এসব জিনিস পত্র তিনি নিয়ে যান বলে অভিযোগ সবার। বিষয়টি জানাজানি হলে ১৯ জুন ২০১৮, বুধবার পরিচালনা কমিটি এবং এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে সেগুলো উদ্ধার করেন। এদিকে বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর কোথায় জানতে চাইলে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তবে এলাকাবাসী এবং পরিচালনা কমিটির অভিযোগ বিদ্যালয়ে কোন প্রকার চুরির ঘটনা ঘটেনি।
চুরির ঘটনার বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা শাকী জানান, ১৯ জুন স্কুল খোলার দিন আমি প্রথমে স্কুলে আসি এবং অফিসকক্ষ খুলে চেয়ার এলোমেলো দেখি। কিছুক্ষন পর আরো দুইজন শিক্ষিকা উপস্থিত হন। পরে প্রধান শিক্ষক আসেন। এদিকে অফিস কক্ষের এমন অবস্থা এবং আমাদের (সহকারী শিক্ষকদের) টাকা জমানো একটি মাটির ব্যংক দেখতে না পেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে তিনি চুপ থাকেন। মাটির ব্যাংকের কথা শুনে প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষিকা মেহুরন নেছাকে চাবি দেন এবং তার আলমিরা খুলতে বলেন। ওই শিক্ষিকা আলমিরা খোলার সাথে সাথে প্রধান শিক্ষক চিৎকার দিয়ে বলেন প্রজেক্টর কই। প্রজেক্টর চুরি হয়েছে। সহকারী শিক্ষিকা মেহরুন নেছা জানান, চাবি দিয়ে আলমিরাটা খোলার সাথে সাথেই হেড স্যার প্রজেক্টর নাই বলে চিৎকার করতে থাকেন।
পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি সফিয়ার রহমান ব্যাপারী বলেন, প্রজেক্টর চুরির ঘটনা প্রধান শিক্ষকের নাটক। অফিস কক্ষ তালা দেয়া, আলমিরা তালা দেয়া চোর কিভাবে চুরি করলো।
বর্তমান সভাপতি আতাউর রহমান জানান, চুরি হলে দুইটা তালা ভাঙ্গার কথা। তালা ঠিক আছে ভিতর থেকে কিভাবে প্রজেক্টর চুরি হয়। আসলে তিনিই এটা আত্মসাৎ করেছেন।
এদিকে কয়েকশত অভিভাবক এবং এলাকাবাসী গতকাল বৃহঃস্পতিবার সারাদিন বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন। পরে প্রধান শিক্ষক গা ঢাকা দেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন মুঠো ফোনে জানান, শ্রেনী কক্ষের তালা ভালো না থাকায় চোর সেই কক্ষদিয়ে প্রবেশ করে এবং পার্টিশান টপকে অফিস কক্ষে আমার আলমিরাতে রাখা প্রজেক্টর চুরি করে নিয়ে যায় এবং আলমিরা আবার লাগিয়ে দিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কচাকাটা থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় সরকার জানান, ঘটনাটি শুনেছি অফিসিয়ালি কোন কাগজপত্র পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য উক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন দক্ষিণ বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীকালীন উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলে তাকে বদলী করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *