রবিউল আলম লিটন,ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভূরুঙ্গামারী পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষে পদার্পন করেছে। শতবর্ষ উপলক্ষে বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্মরত শিক্ষক মন্ডলীর উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে।
তথ্যমতে ,বর্তমান ভূরুঙ্গামারী হাট-বাজারের উত্তর পূর্ব সীমানায় তৎকালিন ভূরুঙ্গামারী- কুড়িগ্রাম রোড সংলগ্ন একটি সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ছিলো। এই দাতব্য চিকিৎসালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ভূরুঙ্গামারী থানার তৎকালিন দারোগা জনাব মোঃ গোলাম ওয়াহেদ তরফদার (পবনা জেলা)নিজেদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। পরে তৎকালিন ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জনাব তাহের উদ্দিন সরকার, পাইকেরছড়া ইউনিয়ন বোর্ডের তৎকানি প্রেসিডেন্ট জনাব নঈমুদ্দিন সরকার ,শিক্ষানুরাগি জনাব ছফর উদ্দিন মন্ডল ও বাবু হরেকান্ত রায়, জয়মনিরহাটের জমিদার শ্রীমন্ত সরকার , মড়োয়ারী ব্যবসায়ী শিউজি রাম চোপড়া ও শ্যামল চোপড়াসহ এলাকার গুণিজনেরা একটি স্কুল প্িরতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এভাবেই সকলের প্রচেষ্টায় ১ জানুয়ারী ১৯২০ খ্রিঃ ভূরুঙ্গামারী মাইনর ইংলিশ স্কুল (৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত) নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্র শুরু হয়। এসময় প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন বহলগুড়ি নিবাসী জিনাত উদ্দিন আহমেদ। উক্ত স্কুলের হেড পন্ডিত ছিলেন আব্দুল ফতেহ (কুমিল্লা)। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন গোলাম ওয়াহেদ তরফদার ও বাবু হরে কান্ত রায়। এটি পর্যায়ক্রমে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে বিদ্যমান ছিলো। ১৯৩৪- ৩৫ সালে নলেয়া মৌজায় জমি ক্রয় করে ভূরুঙ্গামারী হাই ইংলিশ স্কুল নামে প্রতিষ্ঠানটি পূণার্ঙ্গ হাইস্কুল হিসাবে চালু করা হয়। এটির প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন বাবু অমূল্য কুমার ঘোষ। এসময় কালেই ভূরুঙ্গামারী হাই ইংলিশ স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় প্রধান শিক্ষক অমূল্য কুমার ঘোষ ভারতে চলে গেলে অত্র এলাকার কৃতি সন্তান অত্র বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আব্দুল হক সাহেবকে প্রান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। সে সময় স্কুলের সেক্রেটারি ছিলেন মরহুম এফাজ উদ্দিন সরকার। নদী ভাঙ্গনের ফলে ১৯৬৪-৬৫ সালে স্কুলটি বর্তমান জায়গায় আনা হয় এবং ভূরুঙ্গামারী হাই স্কুল নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ভূরুঙ্গামারী পাইলট স্কুল নামে পরিচিতি লাভ করে। এসময় পুরাতন স্কুল ঘরের টিন, কাঠ, ইট ইত্যাদি সরঞ্জাম দিয়ে লম্বা টিনসেড আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। বিশাল খেলার মাঠসহ উক্ত স্থাপনা দীর্ঘদিন পর্যন্ত ছিলো। বর্তমানে সরকারীভাবে নির্মিত একটি ৩ তলা ভবন, একটি একতালা ও ৩টি আধাপাকা ভবনের পাশাপাশি উক্ত টিন সেডের একাংশ প্রতিষ্ঠাকালিন সময়ের স্মৃতি বহন করছে। ২৮ মে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারী ঘোলণা করা হয়। শতবর্ষ পালন উপলক্ষে বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ছাত্র এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারর প্রফেসর মোজাম্মেল হক সাহেবকে আহ্বায়ক করে একটি উৎযাপন পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৯ ও ২০ জানুয়ারী দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানাগেছে। শতবর্ষ উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান আলী জানান, শতবর্ষ পালন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসুচি নেয়া হয়েছে।