এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ “মুই কোনদিন স্বপনেও ভাবো নাই ইটের পাকা বাড়িতে ঘুমিবার পাইম। শেখের বেটি হাসিনা’র কারনে পাকা ঘর পাচ্ছি, সৃষ্টিকর্তা শেখ হাসিনাকে সুস্থ রাখুক” এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব বাসুলী গ্রামের ভূমিহীন গেন বালা বৈশ্য (৪৮)।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাটখড়ি ও বাঁশের বেড়া এবং জরাজীর্ণ টিনের চালা একটি বাড়ির উঠানে বসে রোদ পোহাচ্ছেন। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিয়ের কয়েক বছর পর স্বামী মারা যায়। কোনো সন্তানাদি না থাকায় অন্যের বাড়িতে কাজ করে কুঁড়ে ঘরে জীবনযাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকা বাড়ি ও দুই শতক জমির খবরে যেন খুশির শেষ নেই তার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে নতুন ঠিকানা। গৃহহীন পরিবারের জন্য সরকারি খাস জমিতে গৃহ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন গৃহহীন পরিবারগুলো তাদের স্বপ্নের ঘর পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এ উপহার পেয়ে খুশি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারগুলো।
গত ১০ নভেম্বর খানসামা উপজেলায় গৃহ নির্মাণ কাজের ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, এমপি।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের গৃহহীনদের জন্য নির্মিত অধিকাংশ বাড়ির কাজ প্রায় শেষের দিকে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,
“আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার” এই স্লোগানে এবং “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৪১০ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য খাস জমিতে গৃহ নির্মাণ কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।
প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান করে সেই জমির ওপর ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি গৃহের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী সবগুলো ঘর তৈরি করা হচ্ছে। এসব গৃহে দুটি সেমি-পাকা ঘর, রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেট, ইউটিলিটি স্পেস, বারান্দাসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। প্রত্যেক সুবিধাভোগীর নামে সরকারি ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রেশন, নামজারি সম্পন্নকরণ ও গৃহ প্রদানের সনদ প্রদান ২০ জানুয়ারীর মধ্যে সকল কাজ সম্পন্ন করে সুবিধাভোগী পরিবারের কাছে গৃহ হস্তান্তর করা হবে।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম জানান, প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক তাদের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ কাজ প্রকল্পের ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী সম্পন্ন হওয়ার পথে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আগামী ২৩ জানুয়ারী ২০২১ উপকারভোগীদের গৃহ হস্তান্তর করবেন। এরপরেই অসহায় গৃহহীন পরিবারগুলো মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে।