ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার :: মৌলভীবাজার জেলা সদরের কামালপুর ইউনিয়নস্থিত ইসলামপুর গ্রামে চিহ্নিত অপরাধীদের ভয়ে প্রায় গ্রামছাড়া এক কুয়েত প্রবাসীর পরিবার। অপরাধীদের নিষেধ সত্তেও আদালতে মামলা দায়ের করায় এ পরিস্থিতিতে নিপতিত হয়েছে ওই পরিবার। কুয়েত প্রবাসীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে- গত ২৯ জানুয়ারী রবিবার রাত ১০টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা সদরের কামালপুর ইউনিয়নস্থিত ইসলামপুর গ্রামের পাবেল মিয়া, সুমন মিয়া, আলমগীর, নুরুল ইসলাম, জুয়েল মিয়া ও জরিফ মিয়া একই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল আহাদের বসতগৃহে প্রবেশ করে পরিবারের সবাইতে ছুরির মুখে জিম্মি করে তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমকে চড়-থাপ্পর মেরে, কাপড়-চোপর ধরে টানা-হেচরা করে শ্লীলতাহানি ও গলা চেপে ধরে ষ্টিল আলমিরার চাবি ছিনিয়ে নেয়। এরপর ষ্টিল আলমিরায় রক্ষিত, কুয়েত থেকে পাঠানো নগদ ৭০ হাজার টাকা, ৩ ভরি ওজনের স্বর্নালংকার, বিদেশী ৩টি কম্বল ও ১টি ইস্ত্রি ডাকাতি করে এবং এ ঘটনা নিয়ে কারো কাছে মুখ খুললে বা মামলা-মোকদ্দমা করলে স্বপ্না বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকী দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিচার-মিমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হলে ঘটনার ৩ দিন পর গত ২ ফেব্র“য়ারী স্বপ্না বেগম বাদী হয়ে, পাবেল মিয়া, সুমন মিয়া, আলমগীর, নুরুল ইসলাম, জুয়েল মিয়া ও জরিফ মিয়ার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমল আদালতে একটি মামলা (নং- ৪০/২০১৭ (সদর) দায়ের করেন। মামলা দায়েরের খবর পেয়ে অপরাধীদের অব্যাহত হুমকীতে স্বপ্না বেগম প্রাণভয়ে সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। বিলম্বে সংবাদ পেয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- কুয়েত প্রবাসী আব্দুল আহাদেরই ভাই-ভাতিজা-আতœীয়। আব্দুল আহাদ ও তার অন্যান্য ভাইদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বৈষয়িক বিরোধ বিদ্যমান। আব্দুল আহাদের অনুপস্থিতির সুযোগে এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তার অন্যান্য ভাইদের পরিবারবর্গ ও আব্দুল আহাদের পরিবারবর্গের মধ্যে প্রায়শ:ই ঝগড়া-বিবাদ লেগেই আছে। কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও পরিবারবর্গের দাবী- এসব বিরোধের জের হিসাবেই আসামীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অপরদিকে, আসামীপক্ষের দাবী- এসব বিরোধের জের হিসাবেই হয়রানীর উদ্দেশ্যে স্বপ্না বেগম এ সাজানো মামলা দায়ের করেছেন। তবে, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এলাকাবাসী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন- আব্দুল আহাদের কন্যা আয়শা আক্তার নাজমিন মোবাইল ফোনে সম্পর্ক করে ওসমানীনগর থানার করমসী গ্রামের ফারুক আহমদের পুত্র সাজন আহমদের হাত ধরে ভেগে গিয়েছিল। কয়েকমাস নিখোঁজ থাকার পর একপর্যায়ে নাজমিনকে নিয়ে ঘরজামাই হয়ে সাজন এখানে বসবাস শুরু করে। সাজন-নাজমিনের বিয়ে হয়েছে কি-না তা কেউ নিশ্চিত নয়। সাজন এ বাড়ীতে বসবাস শুরুর পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এ পরিবারের সবকিছুই পরিচালিত হচ্ছে সাজনের নেতৃত্বে। সে-ই ভাই-ভাইয়ের মধ্যকার বিরোধ উসকে দিচ্ছে। সাজনের কারণেই আব্দুল আহাদের পরিবারবর্গের এ পরিণতি। মামলার ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি। তবে, সত্য-মিথ্যা জানিনা।